ঢাকা     সোমবার   ১৭ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ৪ ১৪৩১

ফুটবলার হামজার আগমন ঘিরে উৎসবের আমেজ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ১৬ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ২৩:৪৬, ১৬ মার্চ ২০২৫
ফুটবলার হামজার আগমন ঘিরে উৎসবের আমেজ

হামজার আগমনকে ঘিরে নিজ গ্রাম স্নানঘাটসহ পুরো জেলাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। রঙিন কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে গেট। ছবি: রাইজিংবিডি ডটকম

ইংলিশ ফুটবলার হামজা চৌধুরী। তবে এবার তার পরিচয়টা হচ্ছে ভিন্ন। অভিষেক হতে যাচ্ছে দেশের হয়ে লাল সবুজের জার্সি গায়ে। আর এ উপলক্ষে আসছেন প্রিয় মাতৃভূমিতে।

সোমবার (১৭ মার্চ) হামজা চৌধুরী সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানে থেকে নামার পর গাড়িযোগে সরাসরি হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে নিজ বাড়িতে যাবেন। তার আগমনকে ঘিরে নিজ গ্রাম স্নানঘাটসহ পুরো জেলাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

আরো পড়ুন:

হামজাকে সংবর্ধনা দিতে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। ছবি: রাইজিংবিডি


সাজ সাজ রব পড়েছে তার নিজ গ্রামে। হামজাকে অভিনন্দন বার্তা জানিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরনে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। নিজ এলাকার কৃতি সন্তানকে বরণ করতে প্রস্তুত গ্রামবাসী। হামজার আগমনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করছে বাফুফে। হামজার সাথে গ্রামের বাড়িতে আসছেন তার মা, ভাই, স্ত্রী ও তিন সন্তান। বাবা দেওয়ান মুর্শেদ চৌধুরী চলে এসেছেন আগেই।

ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির তারকা হামজা চৌধুরী, যিনি সেখানে একমাত্র বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াচ্ছেন হামজা। ছোটবেলা থেকেই দেশের প্রতি অন্যরকম টান ছিল হামজার। মা-বাবার সাথে দেশেও এসেছেন বেশ কয়েকবার। শান্ত ও নম্র স্বভাবের হামজা খোলোয়াড়ি জীবনে যেমন ছড়িয়েছেন খ্যাতি, তেমনি গ্রামের সাধারণ মানুষদের কাছেও তিনি অত্যন্ত প্রিয়। 

হামজা গ্রামের বাড়ি স্নানঘাটে গড়ে তুলেছেন একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা, যেখানে পড়াশোনা করছেন এতিম শিশুরা।

পরিবারের সদস্যদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর পর দেশে আসছেন হামজা চৌধুরী। এক দিন থাকবেন গ্রামের বাড়িতে। পরদিন ১৮ মার্চ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে। আর ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে খেলতে ২০ মার্চ দেশ ছাড়বেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হবে দেওয়ান হামজা চৌধুরীর। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, খাবারের তালিকায় ভাত ও গরুর মাংস তার প্রিয় খাবার, সাথে দেশি সবজিও তার পছন্দের। হামজার খাবারের তালিকায় বেশ কয়েক ধরনের মাংস পরিবেশন করা হবে।আর রাতে ঘুমাবেন পৈত্রিক বাড়িতেই।

স্নানঘাট এলাকার পল্লী চিকিৎসক সজল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের সন্তান দেশের জার্সি গায়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে, এটা আমাদের জন্য গৌরবের। তার আগমনকে ঘিরে আমরা উচ্ছ্বসিত। বিশেষ করে তরুণরা তাকে একনজর দেখার জন্য বিশেষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে।”

তিনি বলেন, “হামজা ছোট থাকতে যখন বাড়িতে আসত, তখন আমি নিজেও তার সাথে ফুটবল খেলেছি। ফুটবলের প্রতি ছোটবেলা থেকেই তার টান ছিল।”

আব্দুল আজিজ বলেন, “হামজা আমাদের ছেলে। আমরা চাই সে দেশের হয়ে লাল-সবুজের পতাকা বিশ্ব দরবারে উঁচিয়ে ধরুক। নতুন বার্তা নিয়ে হামজা আসাছেন, তাই এবার আমরা তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করেছি।”

হামজার বাবা দেওয়ান মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, “যদি হামজার মতো আরো খেলোয়াড় দেশের হয়ে খেলতে আসেন এবং ট্রেনিংসহ পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পান, তাহলে আগামী ২০৩০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের খেলার সম্ভাবনা থাকবে।” 

তিনি আরো বলেন, “ভারতের বিপক্ষে খেলায় হামজা যেন দেশের হয়ে ভালো কিছু করতে পারে, সেজন্য সবাই তার প্রতি দোয়া রাখবেন।”

ঢাকা/মামুন/এস/রাসেল

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়