ঢাকা     শুক্রবার   ২৮ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ১৫ ১৪৩১

হবিগঞ্জে ২০০ বছরের পুকুর দখল, নীরব পরিবেশ অধিদপ্তর

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ২১ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ১৬:৫৩, ২১ মার্চ ২০২৫
হবিগঞ্জে ২০০ বছরের পুকুর দখল, নীরব পরিবেশ অধিদপ্তর

হবিগঞ্জ শহরের গোপীনাথ পুকুরের একটি অংশ দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে

হবিগঞ্জ জেলা শহরে ২০০ বছরের পুরোনো গোপীনাথ পুকুরের একটি অংশ মাটি ভরাট করে দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তর গত ১৯ জানুয়ারি ব্যাখ্যা চেয়ে চার ব্যক্তিকে নোটিশ দেয়। সাতদিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দেওয়ার কথা থাকলেও কি জবাব মিলেছে, দুই মাস পরও তা জানাতে নারাজ কর্মকর্তারা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, পুকুরের যে জায়গায় মাটি ভরাট করা হয়েছিল, তা আগের মতোই রয়েছে। মাটি ফেলার জায়গাটি জাল ও বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে রেখেছেন প্রভাবশালীরা। তাদের ভয়ে স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। 

নোটিশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- গোপীনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল কালাম, আবদুস সালাম, অমূল্য চন্দ্র দাস এবং চৌধুরী বাজার এলাকার বাসিন্দা শংকর পাল।

আরো পড়ুন:

এলাকাবাসী জানান, হবিগঞ্জ শহরের গোপীনাথপুর এলাকায় ১ একর ৫৩ শতক আয়তনের একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরটি চার পাড়ে বসবাসরত ৪০ থেকে ৫০টি পরিবারের মালিকানাধীন। এই পুকুরের চারপাশ ঘেঁষে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েকজন বাসিন্দা দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব পাড়ে মাটি ফেলে দখল করে নিয়েছেন পুকুরের একাংশ। এতে পুকুরপাড়ের বাসিন্দারা বাধা দেন। সেই বাধা উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে মাটি ফেলা হয় পুকুরে। 

এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুকুর দখলের প্রমাণ পান এবং চার ব্যক্তিকে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সাতদিনের সময় বেঁধে দিয়ে ১৯ জানুয়ারি নোটিশ দেন। এরপর দুইমাস অতিবাহিত হলেও পুকুর দখল মুক্ত করতে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন জানান, স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের কয়েকজন লোক ঘটনাস্থলে আসেন। তারা পরবর্তীতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন কিনা তা তারা জানতে পারেননি। পরিবেশ অধিদপ্তর এভাবে নিরব থাকলে ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি দখলদারদের কবলে চলে যাবে।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে গাপীনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল কালাম বলেন, “পুকুরের একটি অংশ মাটি ভরাট করে দখলের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি পুকুর দখল করিনি।” অভিযুক্ত অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “ওই চার ব্যক্তি নোটিশের জবাব দিয়েছেন। সেটি সিলেটে বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। জবাবে কি উল্লেখ রয়েছে তা বলতে পারব না। এর বেশি তথ্য প্রয়োজন পড়লে সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে যোগাযোগ করুণ।” 

নোটিশ দিয়েছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের তৎকালীন উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান টুকু। এরপর তিনি হবিগঞ্জ থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান।

বর্তমান উপ-পরিচালক ড. মো. ইউসুফ আলী বলেন, “কি জবাব দিয়েছে, তা এখনই বলতে পারব না। এ ঘটনায় শিগগির কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করব।” 

পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ারের সরকারি মোবাইলে ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়