সাগরে মাছ নেই, জেলে পরিবারে ঈদের আনন্দ ম্লান
পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

জেলে পরিবারের সন্তানরা
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ঈদকে সামনে রেখে সারা দেশে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। প্রিয়জনের জন্য বিভিন্ন ধরনের পোশাক ও প্রসাধনী কিনতে মানুষজন ভিড় করছেন শপিংমল-ফুটপাতের ওপর থাকা দোকানগুলোতে। তবে, দীর্ঘদিন ধরে সাগরে মাছের আকাল থাকায় এবার ঈদ উৎসব ম্লান হতে চলেছে জেলে পরিবারগুলোর।
পটুয়াখালীর লতাচাপলী ইউনিয়নের পশ্চিম খাজুরা গ্রামের আবাসনের বাসিন্দা রাসেল হাওলাদার (৪০)। সেখানকার জরাজীর্ণ একটি ঘরে পরিবারের চার সদস্য নিয়ে তার বসবাস। প্রায় ৩ মাস ধরে তিন দফা সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ফিরছেন খুবই কম সংখ্যক মাছ নিয়ে। এই মাছ বিক্রি করে যা টাকা পেয়েছেন, তা দিয়ে সংসারের বাজার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। তাই এবার ম্লান হতে যাচ্ছে তার পরিবারে ঈদ আনন্দ।
শুধু রাসেল হাওলাদারই নয়, একই অবস্থা ওই আবাসনের ১২৭ পরিবারসহ জেলার অধিকাংশ জেলে পরিবারের। অনেক জেলে ঋণগ্রস্থ। ফলে এই পল্লীর শিশু থেকে শুরু করে সবার চোখে মুখে লক্ষ্য করা গেছে হতাশার ছাপ।
রাসেল হাওলাদার বলেন, “একটি ট্রলারে আমরা ১০ জেলে তিন দফা সাগরে গেছি। ইলিশ একেবারেই পাইনি। কিছু হাছড়া মাছ পেয়েছি। সেই মাছ বিক্রি করে আমাদের বাজার খরচই ওঠেনি। বর্তমানে ঈদের কেনাকাটা তো দূরের কথা ঘরের বাজার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।”
সোলেমান গাজী নামে অপর জেলে বলেন, “সাগর-নদীতে কোথাও মাছ নেই। তিনদিন আগে সাগর থেকে এসেছি, শুধুমাত্র তেল খরচ উঠেছে, বাজার খরচ ওঠেনি। এখন ঠিকমতো ঘরের বাজার করতে পারছি না। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। ঈদে বাচ্চাদের কোনো কিছু কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই।”
জেলে হোসেন মিয়া বলেন, “আমি ২০ হাজার টাকার মতো দেনা হয়েছি। সাগরে মাছ না থাকায় এ দফায় আর সাগরে যাওয়া হয়নি। আসলে জেলে কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজও পারি না। তাই আমাদের ঈদ আনন্দে এবার মাটি হয়ে যাবে।”
কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে সাগর ও নদীতে মাছের প্রাপ্তিতা অনেক কম রয়েছে। তাই জেলেরা বর্তমানে অসহায় অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। জেলেদের সহযোগিতার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ