ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৭ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩১

বাবাকে ‘হত্যার’ পর ছেলের মৃত্যু

শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০০, ২৪ মার্চ ২০২৫  
বাবাকে ‘হত্যার’ পর ছেলের মৃত্যু

মকবুল হোসেন মোল্লা

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বাবাকে হত্যার পর এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে যুবক তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এর কিছুক্ষণ পর অভিযুক্তের মরদেহ উদ্ধার হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম মকবুল হোসেন মোল্লা। তিনি উপজেলার চেরাগআলী বেপারী কান্দি এলাকার বাসিন্দা। মারা যাওয়া যুবকের নাম রুবেল মোল্লা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চেরাগআলী বেপারী কান্দি এলাকার কৃষক মকবুল হোসেন মোল্লার প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম ২৯ বছর আগে তিন সন্তান রেখে মারা যান। এরপর মকবুল বিয়ে করেন সেলিনা বেগমকে। সেই ঘরে জন্ম নেয় চার সন্তান। মকবুল আগের ঘরের একমাত্র ছেলে সন্তান রুবেল মোল্লা বড় হওয়ার পর তাকে সাবলম্বী করতে পাঠিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়।

আরো পড়ুন:

১৪ বছর প্রবাস জীবন শেষে দেড় বছর আগে বাড়ি ফেরেন তিনি। এরপর দুই স্ত্রীর সন্তানদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য, মকবুল বাড়ির পাশেই রুবেল মোল্লার জন্য তৈরি করে দেন আলাদা বাড়ি। এছাড়াও বিয়ের জন্য দেখা শুরু করেন পাত্রী। 

বছর খানেক আগে নতুন বাড়ির আঙ্গিনায় কিছু আম ও পেয়ারা ফলের গাছ লাগিয়ে দেন মকবুল। গতকাল রবিবার (২৩ মার্চ) কোনো কারণ ছাড়াই গাছগুলো কেটে ফেলেন ছেলে। বিষয়টি নিয়ে সন্ধ্যায় মকবুল ও তার ছেলে রুবেল মোল্লার কথা কাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রুবেল মোল্লা কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন বাবা মকবুলকে। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে মকবুলকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক মকবুলকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ওই ঘটনার পর রুবেল মোল্লাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় মাঠের মধ্যে। পুলিশের ধারণা, ঘটনা ঘটিয়ে পালানোর সময় মাটিতে পড়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান রুবেল মোল্লা। পুলিশ দুইটি মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, “চিৎকার চেচামেচির খবর পেয়ে দৌঁড়ে এসে দেখি মকবুল মাটিতে পড়ে আছেন। তার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন, তিনি মারা গেছেন। তার ছেলে রুবেল মোল্লাকে একটি মাঠের পাশে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।”

মকবুলের ভাই আনোয়ার মোল্লা বলেন, “রুবেলের মা মারা যাওয়ার পর আমার ভাই মকবুল আরেকটি বিয়ে করেন। সৎ মা ও বাবা দুইজনই সন্তানকে ভালোবাসতেন। ছেলের সঙ্গে বাবার মধুর সম্পর্ক ছিল। ছেলে বাবাকে হত্যা করবে এমনটি কখনো কল্পনা করতে পারিনি আমরা।”

নড়িয়া থানার ওসি আসলাম উদ্দিন মোল্লা বলেন, “মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে  ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়