ঢাকা     মঙ্গলবার   ০১ এপ্রিল ২০২৫ ||  চৈত্র ১৮ ১৪৩১

কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি, জেলেশূন্য মেঘনার অভয়াশ্রম

চাঁদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২২, ২৮ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ১১:৫৭, ২৮ মার্চ ২০২৫
কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি, জেলেশূন্য মেঘনার অভয়াশ্রম

ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকাসহ সব ধরেনর  মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময় জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে টাস্কফোর্স অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ফলে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর অনেকটাই জেলে শূন্য অভয়াশ্রম এলাকা। 

দুই মাসের অভিযান সফল হলে ধারাবাহিক ইলিশ উৎপাদন বাড়বে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।

জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৪৩ হাজার জেলের বসবাস। মাছ ধরাই তাদের পেশা। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা কর্মহীন দিন কাটাচ্ছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক জেলেকে ৪ মাসের জন্য ১৬০ কেজি চাল খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেঘনা উপকূলীয় সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, টিলাবাড়ি ও পুরান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নদী অনেকটাই জেলে শূন্য। কারণ হিসেবে জানা গেছে সদর ও হাইমচর উপজেলার নদীসংযুক্ত খালে মৎস্য বিভাগের লোকজন স্পীড বোট নিয়ে  পাহাড়া দিচ্ছে। দিন ও রাতে এই দুই উপজেলায় ১০টি স্পীড বোট নিয়ে মৎস্য কর্মকর্তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন।

সদরের আনন্দ বাজার এলাকার জেলে মানিক খান, হযরত আলী বকাউল, বিল্লাল দর্জি ও ইদ্রিস আলী প্রধানীয়া বলেন, ‘‘জাটকা রক্ষায় এখন আমরাই মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করি। আমরা জাটকা ধরা থেকে বিরত আছি এবং কেউ আমাদের এলাকায় জাটকা ধরতে এলে প্রশাসনকে  জানাই।’’

‘‘বিগত বছরের তুলনায় এ বছর মৎস্য বিভাগ, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের অভিযান কঠোর হওয়ায় জাটকা ধরতে নামছে না জেলেরা। কারণ শুধু নিষিদ্ধ কারেন্ট জালই নয়, যে কোন জাল নদীতে ফেলা হলেই প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’ বলেন তারা। 

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, ‘‘অভয়াশ্রমে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার অর্ধেক সময় অতিবাহিত হয়েছে। এই সময়ে আমরা দিন ও রাত নদীতে অবস্থান করছি। বিভিন্ন খালের মুখে আমাদের অবস্থান থাকায় জেলেরা নামতে পারছে না। ফলে ২৪ ঘণ্টা আমরা নদী জাল ও জেলে শূন্য রেখেছি।’’

ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, ‘‘জাটকা রক্ষার জন্য দেশের পাঁচটি অভয়াশ্রমের মধ্যে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা অন্যতম। কারণ হচ্ছে সবগুলো অভয়াশ্রমে যে পরিমান জাটকা এর মধ্যে অর্ধেকই হচ্ছে চাঁদপুরে। সদর ও হাইমচর মেঘনায় এসব জাটকার বিচরণ বেশি থাকে। যে কারণে মৎস্য বিভাগ এ বছর ১০টি স্পীড বোট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করছে। তারা ২৪ ঘণ্টা নদী পাহারায় আছেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের এই কঠোর অবস্থান ও জাটকা রক্ষা করার ফলে ইলিশের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাবে।’’

অমরেশ//


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়