রাত দুপুরে যুবকদের বাস ধাওয়া, পুলিশ বলছে ‘ডাকাতির জন্য নয়’
নোয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

ঈদের দিন মধ্যরাতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীগামী একুশে পরিবহনের একটি বাসকে মোটরসাইকেল আরোহীদের তাড়া করা, তাদের আঘাতে বাসচালকের আহত হওয়ার ঘটনায় অবশেষে নেয়াখালী সুধারাম মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বাসটির মালিক জহিরুল ইসলাম তারেক।
আলোচিত এই ঘটনার পাঁচদিন পর শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে তিনি সাধারণ ডায়েরি করেন।
অন্যদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, বাসটির চালক জোনাকি পরিবহনের অন্য একটি বাসকে ওভারটেক করার সময় একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেওয়ার উপক্রম হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেলে করে একদল যুবক বাসটি থামানোর চেষ্টা করে এবং ব্যর্থ হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বাসচালক আঘাতপ্রাপ্ত হন। এটি ডাকাতির কোনো চেষ্টা নয়।
রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এক পোস্টের মাধ্যমে এ তথ্য জানায় পুলিশ সদর দপ্তর।
‘কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে বাস ডাকাতির চেষ্টা’ শিরোনামে ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ওই পোস্টে আরো বলা হয়, গত ৩১ মার্চ রাত আড়াইটার দিকে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একুশে পরিবহনের একটি বাসকে অজ্ঞাতনামা ৮-১০টি মোটরসাইকেল ধাওয়া করে থামানোর চেষ্টা করে এবং চলন্ত বাসে ইট ছুঁড়ে বাসচালককে আহত করার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনাকে বাস ডাকাতির চেষ্টা শিরোনামে বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।
পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়, একুশে পরিবহনের বাসটি কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড সংলগ্ন রাস্তায় ওভারটেক করার সময় একটি মোটরসাইকেল আরোহীকে চাপা দেওয়ার উপক্রম হলে ওই মোটরসাইকেল আরোহী এবং তার সঙ্গে থাকা ৮-১০ জন মোটরসাইকেল আরোহী ক্ষিপ্ত হয়ে বাসটিকে থামাতে বলে। কিন্তু বাসচালক বাস না থামিয়ে চলার গতি বাড়িয়ে দেয়। গভীর রাত ও রাস্তা ফাঁকা থাকার কারণে বাসযাত্রীরাও চালককে বাস থামাতে নিষেধ করে। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহীরা ইট ছুঁড়ে মারলে বাসের চালক মো. সোহেল আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ সময় বাসের একজন যাত্রী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহযোগিতা চান।
পুলিশ সংবাদ পেয়ে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা চৌরাস্তা থেকে দ্রুত বেগে সোনাইমুড়ী-লাকসাম অভিমুখে চলে যায়। তবে সেখানে বাসটিকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে জানা যায়, বাসচালক বাস নিয়ে মাইজদী চলে গেছেন। তিনি বর্তমানে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উক্ত ঘটনাকে চলন্ত বাসে ডাকাতির চেষ্টা বলে কিছু মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, যা সঠিক নয়।
এ দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. রাজিব আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘‘ইটের আঘাতে চালকের মুখমণ্ডল, দাঁত ও মাড়িতে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। তার চিকিৎসা চলছে। শনিবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। বর্তমানে তার অবস্থা উন্নতির দিকে।’’
নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘‘বাসের মালিক থানায় জিডি করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবে। তবে বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে পোস্ট দেওয়া হয়েছে। সেখানে ঘটনার বিষদ বর্ণনা রয়েছে। তারপরও বাসের মালিকের জিডি খতিয়ে দেখা হবে।’’
মাওলা সুজন//