বৈশাখী মেলা সামনে রেখে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা
এস এম শরিফুল ইসলাম, নড়াইল || রাইজিংবিডি.কম

আসন্ন বৈশাখী মেলা সামনে নড়াইল জেলার বিভিন্ন উপজেলার মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। মৃৎশিল্পীরা বাহারি সব মাটির খেলনা, বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শেষ মুহূর্তে মৃৎশিল্পীদের বাড়ির নারী সদস্যরা মাটির তৈরি খেলনায় রঙ-তুলির আঁচড় দিচ্ছেন।
পহেলা বৈশাখে নড়াইল সদর ও লোহাগড়া উপজেলার একাধিক স্থানে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা বসে। এ সব মেলায় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের কাছে মাটির তৈরি খেলনার বেশ কদর রয়েছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকালে লোহাগড়া উপজেলার কুন্দশী গ্রামের পাল পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, পাল-পরিবারের নারী ও পুরুষ সদস্যরা বিভিন্ন মাটির খেলনা, সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন। তাদের যেন কথা বলার সময়টুকুও নেই। শিশুদের খেলনার মধ্যে রয়েছে, মাটির পুতুল, হাতি, ঘোড়া, দোয়েল পাখি, ময়না পাখি, টিয়া পাখি, হাঁস-মুরগি, নৌকা, মাটির ব্যাংক, মগ, গ্লাস, চায়ের কাপ, পিঠা তৈরির ছাঁচ, নানা জাতের ফুল ও ফুলদানি। এ ছাড়া রয়েছে মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, গৃহস্থালী কাজে ব্যবহার্য দ্রব্যাদি।
উপজেলার কুন্দশী গ্রামের তপন পাল জানান, বছরের এই একটা উৎসব ঘিরে তাদের অনেক আশা থাকে। এমনিতে সারা বছর মৃৎশিল্পের তেমন চাহিদা থাকে না। এখন আর মাটির জিনিসের তেমন কদরও নেই। সারা বছর অভাব-অনাটনে চলতে হয়। আজকাল এই কাজ করা পূর্বপুরুষের পেশা ধরে রাখার চেষ্টামাত্র। বৈশাখ মাস এলে মেলায় মাটির তৈরি খেলনা ও সামগ্রীর চাহিদা থাকে। তাই এ সময়টায় কিছু আয় হয়।
অর্চনা পাল জানান, পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। এই মেলায় শখের বসে অনেকে মাটির সামগ্রী, বিশেষ করে মাটির খেলনা কেনে। তাই এই সময়ে কিছুটা কর্মব্যস্ততা বাড়ে। এখন এ সব তৈরিতে প্রধান উপাদান এঁটেল মাটির অভাব। তার উপরে রঙের বাড়তি দাম। সেই অনুযায়ী তাদের তৈরি জিনিসের দাম ততটা বাড়েনি।
নড়াইল বিসিক কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সোলায়মান হোসেন বলেন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অনবদ্য রূপ মৃৎশিল্প। এর সঙ্গে একদিকে জড়িয়ে আছে জীবিকা, অন্যদিকে নান্দনিকতা ও চিত্রকলার বহিঃপ্রকাশ। মৃৎশিল্প বাঙালির নিজস্ব শিল্প, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের অংশ। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বিসিকের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।
ঢাকা/বকুল