লক্ষ্মীপুরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের জেরে ১৫ বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন দেওয়ান (৪০) নিহতের ঘটনার জেরে অন্তত ১৫টি বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসময় বাড়ির মালামাল লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। তারা জানান, উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীম গাজীর অনুসারীরা হামলার সঙ্গে জড়িত
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষক দলের সংঘর্ষে নিহত ১
নিহত বিএনপিকর্মী সাইজ উদ্দিন উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরঘাষিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিন মাস আগে স্পেন থেকে দেশে আসেন। সাইজ উদ্দিন জিএম শামীম গাজীর অনুসারী ছিলেন।
এলাকাবাসী জানান, আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুহুল আমিন খান, আব্দুল গণি খান, কাশেম খান, এমদাদুল্লাহ গাজী, আরিফ ও তারেক মুহুরীসহ অন্তত ১৫ জনের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তারা উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির দলীয় সূত্র জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীম গাজী ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর জেরে দুই দফায় শামীম ও ফারুকের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ কারণে ওই ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দলসহ সব সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
গতকাল সোমবার বেঁড়ি ও বাবুরহাট এলাকায় কৃষক দল নেতা শামীম গাজী এবং ফারুক কবিরাজের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে একজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হন। এরই জেরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফের হামলা চালিয়ে শামীম গাজীর অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের লোকজনের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বাড়ি ভাঙচুর হওয়া রুহুল আমিনের ভাই আলা উদ্দিন মাস্টার বলেন, “বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে শামীমের লোকজন। তারা মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। বর্তমানে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আছি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত এবং ১৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কেউ থানায় কোনো মামলাও করেননি। মামলা করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাস্থলে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।”
তিনি আরো বলেন, “আজ কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ