পরকীয়ার অভিযোগ, স্ত্রীকে শেকলবন্দি করলেন স্বামী
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ তুলে নাসরিন বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। উপজেলার বাটিকামারি ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, অভিযুক্ত নাসরিনকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন তার স্বামী। এর আগেও কয়েকবার তিনি নাসরিনকে মারধর করেন। আজ বিকেলে পরিবারের লোকরা বসবেন। প্রয়োজন হলে তারা মামলা করবেন।
ভুক্তভোগী নাসরিন উপজেলার বাটিকামারি ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী। তিনি একই ইউনিয়নের বাহারা গ্রামের ওসমান শেখের মেয়ে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বাড়ির একটি সিঁড়িতে নাসরিন বসে আছেন। তার কোমর শেকল দিয়ে বাঁধা। শেকলটি পিলারের সঙ্গে তালাবদ্ধ। পাশে ভুক্তভোগীর স্বামী আব্দুর রহমান বসে ছিলেন। চারপাশে উৎসুক জনতাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে ভিডিওতে।
নাসরিন জানান, ২০১৩ সালে সামাজিকভাবে আব্দুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। আব্দুর রহমান অন্য মেয়েদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন বলে কয়েক মাস আগে জানতে পারেন নাসরিন। এরপর নাসরিন ফেসবুকে টিকটক আইডি চালু করেন। এ নিয়ে আব্দুর রহমান নাসরিনকে মঝে মধ্যে মারধর করতেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মারধর করলে নাসরিন আর সংসার করবে না বলে জানান। ওইদিন তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে খুলনায় বোনের বাড়ি যান।
গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) নাসরিনের ভাই মিটল শেখকে দিয়ে খুলনা থেকে নাসরিনকে এনে কোমরে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখেন স্বামী আব্দুর রহমান। আজ রবিবার পুলিশ গিয়ে নাসরিনকে শেকল থেকে মুক্ত করে।
নাসরিনের বোন আসমা বেগম বলেন, “নাসরিনকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিল তার স্বামী। এর আগেও কয়েকবার আমার বোনেকে মারধর করেছেন তিনি। আজ বিকেলে পরিবারের লোকদের নিয়ে বসব। প্রয়োজন হলে মামলা করব।”
নাসরিনের স্বামী আব্দুর রহমান বলেন, “নাসরিন অন্য ছেলেদের সঙ্গে পরকীয়া প্রেম করে। সে বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। নাসরিনের নামে ব্যাংক হিসাবে আরো টাকা রয়েছে। সেই টাকা উত্তোলন করতে হবে একথা বলে তার ভাইকে দিয়ে খুলনা থেকে এনে শেকলবন্দি করে রাখি নাসরিনকে।”
মুকসুদপুর থানার ওসি মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “আমি আজ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আমরা গিয়ে গৃহবধূকে শেকল মুক্ত করি। নাসরিনকে তার বাবার বাড়ি পাঠানোর পাশাপাশি অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি এখন স্বামীর বাড়িতে আছেন।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ