দুই হাত কেটে ফেলেও বাঁচানো গেল না সাদাফকে
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

সাদাফ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত হয় সাদাফ নামে ১২ বছর বয়সী এক শিশু। চিকিৎসকের পরামর্শে দুই হাত কেটে ফেলতে হয় সাদাফের। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ দিন পর মৃত্যুর কাছে হার মানে সাদাফ।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সাদাফ (১২) ফুলবাড়ীয়া মর্ডান প্রি ক্যাডেট স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে উপজেলার জোরবাড়ীয়া কোনাপাড়া এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। লেখা-পড়ার কারণে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ভাড়া বাসায় পরিবারের সাথে থাকত সাদাফ।
সাদাফের বাবা মোজাম্মেল হোসেন জানান, গত ২১ মার্চ সাদাফ প্রতিবেশী উজ্জল মিয়ার বাসার ছাদে সহপাঠীদের সাথে খেলাধুলা করছিল। খেলাধুলার একপর্যায় ঝুলে থাকা পল্লী বিদ্যুতের কভারবিহীন তারের সাথে লেগে থাকা লোহার রডে হাত লাগতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে নিচে খাদে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় সাদাফকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক সাদাফকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে সাদাফের দুই হাত কেটে ফেলতে হয়। দীর্ঘ ২৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ সকালে সাদাফের মৃত্যু হয়।
মোজ্জামেল হোসেন বলেন, “ধার-দেনার টাকায় ছেলের চিকিৎসা করিয়েছি। চিকিৎসার সময় সাদাফের দুই হাত কেটে ফেললেও ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না। আমার তো সব শেষ হয়ে গেল!”
এ বিষয়ে জানতে ফুলবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুতের এজিএম নয়ন চন্দ্র বলেন, “বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাতে আমাদের করার কিছুই নেই।”
ফুলবাড়ীয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুকনুজ্জামান বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। এ ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মিলন/এস