ঢাকা     রোববার   ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩২

বৈশাখ রাঙাতে শেষ সময়ে ব্যস্ত টাঙ্গাইলের মৃৎশিল্পীরা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫  
বৈশাখ রাঙাতে শেষ সময়ে ব্যস্ত টাঙ্গাইলের মৃৎশিল্পীরা

শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।

বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষ। সাড়া বছরে চাহিদা না থাকলেও পহেলা বৈশাখে চাহিদা বেড়ে যায় মৃৎশিল্পীদের। বছরের অন্য সময়ে মৃৎশিল্পের কদর না থাকলেও পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে মাটির তৈজসপত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলনা তৈরি করেন মৃৎশিল্পীরা। বৈশাখ রাঙাতে শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বছরের অন্য সময়ের তুলনায় মৃৎশিল্পীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাটি নরম করে তৈরি করছেন মাটির বিভিন্ন তৈজসপত্র। কেউ কাদা নরম করছেন, কেউ মাটির তৈজসপত্র তৈরি করছেন। নিপুন হাতে তৈরি করছেন হাড়ি-পাতিল, শিশুদের খেলনা। নববর্ষে বাহারি সব খেলনা তৈরি করছেন। সেই খেলনা মেলায় নিয়ে যাবেন মৃৎশিল্পীরা।

মৃৎশিল্পী বিষ্ণু পাল বলেন, “বাপ-দাদার পেশা ছাড়াতেও পারি না। আর ছেড়ে দিলে কী করব? লেখাপড়া করি নাই যে চাকরি করব। মাটির জিনিসের চাহিদা আগের মতো নেই। এখন প্লাস্টিক, মেলামাইন, অ্যালুমিনিয়াম ও সিসার জিনিস বের হয়েছে। মাটির জিনিসের চাহিদা কমে গেছে। আগে এক গাড়ি মাটি কিনতাম এক হাজার টাকা দিয়ে। আর এখন পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা লাগে এক গাড়ি মাটি কিনতে। সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। এ বছর পয়লা বৈশাখের মেলা উপলক্ষে মাটির তৈজসপত্র তৈরি করেছি। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বৈশাখে মাটির জিনিসের চাহিদা ভালো থাকে।”

মৃৎশিল্পী গোলাপি পাল বলেন, “এ বছর ১০ রকমের এক হাজার শিশুদের খেলনা তৈরি করেছি। ছোট ছোট মাটির হাঁড়ি-পাতিল, মাটির চুলা, শিল-পাটা, কড়াই, কলস, কুলা, পুতুল, হাতি, ঘোড়া, মাছ, হাঁসসহ নানা রকম ফল, ফুল আর বাহারি মাটির ব্যাংক, প্লেট, মগ, গ্লাস, চায়ের কাপ তৈরি করেছি। রং তুলির কাজে ব্যস্ত রয়েছি। আশা করছি পয়লা বৈশাখের আগেই রং শেষ করতে পারব। সারা বছর মাটির জিনিসের চাহিদা তেমন একটা থাকে না। বৈশাখ মাসে মাটির জিনিসের চাহিদা থাকে। সবাই মাটির কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে।”

বিসিক টাঙ্গাইল জেলা শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক শাহনাজ বেগম জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এক সময় ১,২৩৫ জন মৃৎশিল্পী ছিলেন। বর্তমানে খুব কম সংখ্যক মৃৎশিল্পী রয়েছেন। যারা বংশের টানে এখনো এই শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন। ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পটি হারিয়ে যাওয়ার পথে। গুটি কয়েকটি পরিবার এখন মৃৎশিল্পের সাথে নিয়োজিত আছেন।

তিনি আরও জানান, মৃৎশিল্পীরা যদি আমাদের কাছে আসে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে পারবো। মৃৎশিল্পীদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

ঢাকা/কাওছার/এস


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়