ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি ওষুধ নষ্টের ঘটনায় তদন্ত

রফিক সরকার, গাজীপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ২২ এপ্রিল ২০২৫   আপডেট: ২১:৪১, ২২ এপ্রিল ২০২৫
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি ওষুধ নষ্টের ঘটনায় তদন্ত

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি ওষুধ মজুতকৃত ওষুধ

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি ওষুধ মজুত করে নষ্ট করার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কমিটি গঠনের পর তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ‘কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: ওষুধ রোগীদের না দিয়ে বিক্রির পরিকল্পনা, সরকার বদলে ওলটপালট’ শিরোনামে গতকাল সোমবার (২১ এপ্রিল) রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ হয়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর পরই একটি তদন্ত কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ঢাকা বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন উপপরিচালক ডা. আজিজ, ডা. হারুনুর রশীদ এবং সহকারী পরিচালক ডা. জমির মো. হাসিবুস সাত্তার। তারা মঙ্গলবার থেকেই মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন।

ঘটনার পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামান্না তাসনীম পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, ‘‘ওষুধের অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। সরকারি নির্দেশেই আমি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তদন্ত চলছে, রিপোর্ট হাতে এলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে বর্তমান ইউএইচএফপিও ডা. মো. হাবিবুর রহমান এবং সাবেক ইউএইচএফপিও ডা. মামুনুর রহমানকে দায়ী করা হচ্ছে। ডা. মামুনুর ২০২২ সালের ১৪ মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ৯ মার্চ পর্যন্ত এই কমপ্লেক্সে দায়িত্বে ছিলেন। তবে তিনি দায় চাপিয়েছেন হাসপাতালের সাবেক স্টোর সহকারী আব্দুর রাজ্জাকের ওপর।

হাসপাতালের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া ওষুধগুলো একাধিক কক্ষে এলোমেলোভাবে পড়ে ছিল। এর মধ্যে কিছু ওষুধ ২০২১ সালেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়, অথচ সেগুলো এখনো সরানো হয়নি।

প্রতিদিন শত শত রোগী বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধের আশায় হাসপাতালে আসেন। অভিযোগ রয়েছে, ওষুধগুলো সময়মতো বিতরণ না করে ইচ্ছাকৃতভাবে মজুত রাখা হয়, কিছু ক্ষেত্রে বিক্রির উদ্দেশ্যে। বিক্রি সম্ভব না হওয়ায় ওষুধগুলো পড়ে থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়।

স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের অব্যবস্থাপনা নতুন নয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন যথাযথ হলে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি কমবে।

তারা আরো জানান, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রশাসনিক গাফিলতি, জবাবদিহিতার অভাব এবং দুর্নীতির একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচিত হবে শুধু দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নয়, ওষুধ সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থার ওপর নতুন নজরদারি কাঠামো তৈরি করা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঢাকা/রফিক/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়