ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

হে নবীন স্বাগতম তোমায়

মুনজুরুল ইসলাম নাহিদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৪, ৩ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হে নবীন স্বাগতম তোমায়

প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে দৃষ্টিনন্দন আলপনা। সুউচ্চ ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরালের সামনেই পিচ ঢালা প্রশস্ত পথের উপর রংতুলির নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় সযত্নে বড় অক্ষরে লেখা ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাগতম’।

দৃষ্টিনন্দন ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরাল দেখে মনে হবে জাতির বিদ্যার্থী সন্তানদেরকে পিতৃস্নেহে অভিবাদন জানাচ্ছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নতুন বর্ষে ভর্তি হতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া বিদ্যার্থীদের প্রতীক্ষায় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার মধ্যবর্তী শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরের শান্ত নীড়। নিবিড় পল্লী গাঁয়ে শহুরে সুযোগ সুবিধার চির সবুজের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন নতুন প্রাণের ছোঁয়া পেতে উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।

এর নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের সাথে নিজেদের যুক্ত করার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ভর্তিচ্ছুদের বরণ করতে প্রিয় বিদ্যাপিঠটি সেঁজেছে নতুন রূপে। ক্যাম্পাস পাড়ার প্রতিটি অঙ্গনে লেগেছে পরিচ্ছন্নতার ছোঁয়া। পাল্টে গেছে ক্যাম্পাসের পুরনো চিত্র। প্রবেশপথ সহ পিচ ঢালা কালো পথগুলোতে শোভা পাচ্ছে বর্ণিল সাজে নানা রঙের তুলির আঁচড়ের রঙিন আলপনায়।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ঘেঁষে থাকা সুদৃশ্য প্রধান ফটকটিকে সাজানো হয়েছে নতুন আঙ্গিকে। রঙিন ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখ শীতল করবে ছায়াঘেরা মায়াভরা এ সবুজ কানন। এ আয়োজন আসন্ন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে অনার্স (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ঘিরে।

ভর্তিচ্ছুদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে প্রস্তুত করা হয়েছে প্রশাসনিক, একাডেমিক ও আবাসিক ভবনগুলোকে। পরিষ্কার করা হয়েছে ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি অঙ্গন। কেটে ফেলা হয়েছে ঝোপ-ঝাড়। গাছে গাছে লাগানো হয়েছে নতুন রঙ। সাজানো হচ্ছে বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনা।

আগত নতুনদের কাছে ক্যাম্পাসকে আকর্ষণীয় করে তুলতে শিক্ষার্থীদের আড্ডার কেন্দ্রস্থল ডায়না চত্বরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে বর্ণিলভাবে সাজানো হয়েছে। সাজানো হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য মুক্তবাংলা, স্মৃতি সৌধ এবং শহীদ মিনারকে।

এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষাকে নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ট্রেনিং সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটের সদস্যরা। যেকোনো অপ্রীতিকর পরস্থিতি এড়াতে ইতোমধ্যেই ক্যাম্পাসে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পরীক্ষার দিনগুলোতে ক্যাম্পাসে বিএনসিসি এবং রোভার স্কাউটের পাশাপাশি থাকবে র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।

পরীক্ষা চলাকালীন যেকোনো ধরনের অপরাধ দমনের জন্য সর্বদা মনিটরিং করবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরীক্ষায় দুর্নীতি দমনে প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রের ফটকে থাকছে মেটাল ডিটেক্টর। প্রধান ফটক থেকে প্রবেশের সময় সবাইকে যেতে হবে আর্চওয়ে গেট পার হয়ে।

শুধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই নয়, ভর্তিচ্ছুদের বরণ করতে ও সার্বক্ষণিক সেবা দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে শিক্ষার্থীরাও। প্রতিটি ভবনে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির রঙিন পোস্টার। নিজ জেলা থেকে আসা ভর্তিচ্ছুদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে সব প্রস্তুতি নিয়েছে ক্যাম্পাসের অগ্রজরা।

পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও ভর্তিচ্ছুদের সেবা দেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ১৭৫ একরের সবুজ এ আঙ্গিনার প্রতিটি প্রাঙ্গনে এখন শুধু নতুনদের পদচারণার অপেক্ষা।

দায়িত্বে থাকা প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু, নিরাপদ এবং আনন্দঘন করতে যা কিছু করা দরকার, সবই করা হচ্ছে। আমরা সব কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ববোধ থেকে করেছি। আশা করছি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারব। আর যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

সাজ আর সজ্জায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি স্থাপনা, গাছ, তুলির আলপনা আর পিচ ঢালা পথ বলার অপেক্ষায় হে ভর্তিচ্ছু স্বাগতম তোমায়...।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।


ইবি/মুনজুরুল ইসলাম/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়