ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘মায়ের হাতের পিঠা মিস করি’

নিয়ামুর রশিদ শিহাব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মায়ের হাতের পিঠা মিস করি’

শীত যতই বাড়ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পিঠাপুলির কদর। শৈত্যপ্রবাহের ঠান্ডায় একটু হলেও মন ও শরীরকে চাঙ্গা করতে মানুষ স্বাদ নিচ্ছে এই শীতের পিঠার। এখন গ্রামের পাশাপাশি পিঠা খাওয়ার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই নগরবাসীও।

বরিশাল শহরের অলি-গলির মুখে ও রাস্তার পাশে পিঠা বিক্রি করে উৎফুল্ল ব্যবসায়ীরাও। তাদের কাছ থেকে কিনে এসবের স্বাদ গ্রহণ করছে নগরবাসী। নগরের মহসিন মার্কেট, চকের পোল, বাজার রোড, বিবির পুকুর পাড়, শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চক্র, লঞ্চঘাট, সদর রোড, জেলখানার মোড়, রূপাতলী বাস টার্মিনাল, বিএম কলেজ, জিলা স্কুল, চৌমাথা, বটতলাসহ বরিশালের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা, অলিগলির মুখে এই পিঠার দোকান দেখা যায়।

নগরীর সদর রোডের পিঠা ব্যবসায়ীদের কাছে দেখা গেছে- চিতই পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, ভাপা পিঠা, পুলি পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠার সমারোহ। বিবির পুকুরপাড়ের ভ্রাম্যমাণ পিঠা বিক্রেতাদেরও বেশ ব্যস্ততায় সময় কাটছে। বিকেল থেকে নগরের মোড়ে মোড়ে পিঠা বিক্রি শুরু হলেও বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় চিতই ও ভাপা পিঠার চাহিদা অনেক বেশি থাকে।

চিতই পিঠার সাথে ধনিয়া পাতা, মরিচ, সরিষা বাটা, শুঁটকি ভর্তা দিয়েও পিঠা বিক্রি করা হয়। এসব দোকানে প্রতি পিস ভাপা ও চিতই পিঠা ৫ টাকা থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০ টাকার পিঠা স্পেশাল পিঠা। এই পিঠা বিক্রি করেই শীতের সময় অনেকে সংসার চালান। অনেকেই মৌসুমি এই ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। তেমন একটা পুঁজি লাগে না বলে সহজেই এ ব্যবসা শুরু করেন অনেকেই।

চকের পোল এলাকার পিঠা বিক্রেতা আলী জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রয়েছে ক্রেতার ভিড়। এতে আয় রোজগারও হচ্ছে ভালোই। যেহেতু ভাপা পিঠার ব্যবসা শীতকালে ছাড়া অন্য কোনো ঋতুতে হয় না, তাই এই সময়টাই এই ব্যবসার জন্য উত্তম সময়।

পিঠা বিক্রেতা দবির চাচা বলেন, ‘শীত বাড়লে পিঠা বিক্রি বেশি হয়। আমার চারটা মেয়ে। দুই জন বিয়া দিছি, আর দুই জন পড়ালেখা করে। মানুষের খেতে কামলা দেই, আর বিকালে পিঠা বিক্রি করতে বসি। এখান থেকে যা আয় করি, তা দিয়েই কোনো রকম সংসার চলে আমার। পিঠা বিক্রিতে আমার পরিবারের সবাই সহযোগিতা করে।’ 

ক্রেতা সিফাত জানান, শীত মানেই পিঠা খাওয়ার ধুম। আর যদি হয় ভাপা পিঠা, তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। নিজেকে চাঙ্গা করার জন্য বন্ধুদের নিয়ে সন্ধ্যায় আসি ভাপা পিঠা খেতে। পিঠা ছাড়া আড্ডা জমেই না।

এক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে আমি পড়াশোনা করি। অনেক দিন হয় বাড়ি যেতে পারি না। মায়ের হাতের পিঠা অনেক মিস করি। তাই ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকেই শীতের পিঠা খাই। খালাদের পিঠাই আমার কাছে এখন মায়ের বানানো পিঠার মতো মনে হয়।

লেখক: শিক্ষার্থী, কম্পিউটার টেকনোলজি, বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।


বরিশাল/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়