ঢাকা     রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৯ ১৪৩১

শিক্ষক-মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট যখন শুভর রোবট 

তানজিন রোবায়েত রোহান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২২, ১৩ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৩:৩৩, ১৩ অক্টোবর ২০২০
শিক্ষক-মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট যখন শুভর রোবট 

নাম শুভ কর্মকার। পড়াশোনা করছে বরিশালের অমৃত লাল দে কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। ছোট সময় থেকেই উদ্ভাবনী মনোভাব তার। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় সে একটি বিস্ময়কর রোবট বানিয়েছে, যার নাম ‘রবিন’। 

রোবটটি বাংলা-ইংরেজিতে কথা বলতে পারে। তবে, সেটিংসে যা ইন্সটল করে সেটআপ দেওয়া হয়, যেভাবে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়, সে অনুযায়ী কাজ করতে পারে শুভর এই বিস্ময়কর তৈরি রোবট। শুভ এটিকে বন্ধু রবিন বলে ডাকে। 

শুভ বলে, ‘ছোটবেলা থেকে আমার রোবটের ব্যাপারে প্রচুর আগ্রহ ছিল। আমি ইউটিউব থেকে বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের রোবট বানানোর কৌশল রপ্ত করে এই রোবটটি বানাতে সক্ষম হয়েছি।’

আরো পড়ুন:

শুভ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করে। তার বাবার নাম সন্তোষ কর্মকার। তিনি একজন ব্যবসায়ী। মা দীপ্তি কর্মকার, গৃহিণী। দুই ভাইবোনের মধ্যে বড় সে।  

শুভ জানায়, সাধারণত এই রোবটটি কোনো স্থানে আগুন লাগলে তা মানুষকে জানাতে পারবে এবং ফায়ার সার্ভিসকেও খবর দিতে পারবে। এটি শিক্ষক ও গাইড হিসেবেও কাজ করতে পারে। 

প্রাণঘাতী করোনার এ সংকটকালে চিকিৎসকরা যখন সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে সংকোচ বোধ করছেন, তখন শুভ কর্মকার বলে, ‘আমার তৈরি রোবট রবিনকে দিয়ে এই সমস্যা সমাধান করা যাবে।’

শুভর বিস্ময়কর বন্ধু রবিন মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করতে পারে। রোবটটি করোনা টেস্ট, করোনায় আক্রান্ত রোগীর খবরাখবর গ্রহণ এবং প্রদান করা, করোনা রোগীর সংস্পর্শে গিয়ে তাকে সেবা দান করা, ডাক্তারের সব নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে পারে। শুধু রোবটটি দিয়ে যে কাজ করানো হবে, সেই কাজ করানোর পূর্বে তাকে সে অনুযায়ী সেটআপ দিতে হবে। বর্তমানেও শুভর তৈরি এই রোবটটি করোনার সব কাজে মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করছে।

শুভ বলে, ‘আমার তৈরি এই রোবটটির মতো আরও কিছু রোবট যদি করোনার এই সংকটকালে ডাক্তারদের অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করানো যায়, তাহলে ডাক্তারসহ চিকিৎসা খাতে কাজ করা সব সাস্থ্যকর্মীর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা কম থাকবে। বর্তমানে আমার তৈরি এই যন্ত্রটির দৃষ্টিশক্তি নেই। ভবিষ্যতে সে দেখতে পাবে, সে অনুযায়ী উন্নয়নের কাজ করছি।’ 

‘আমার এই যন্ত্রটি যে কারোর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সময়ে তাকে চিহ্নিত করতে পারে এবং সে নিজে নিজেই অনেক কিছু শিখতে পারে, মূলত যাকে সেল্ফ লার্নিং বলে। এর জন্য কোনো ইউনিকোডের প্রয়োজন হয় না। যন্ত্রটি অনেক সমস্যার সমাধানও করতে পারে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনেক গণিতের সমাধান, ইংরেজি শব্দের অর্থসহ বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক সমাধান দিতে পারে’, বলে শুভ।

শুভ কর্মকার তার তৈরি এই রোবটটি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, কর্মশালা এবং বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ।     

কুমিল্লা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়