ঢাকা     শুক্রবার   ২৮ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ১৫ ১৪৩১

নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কাটাতে আশ্বাসের বাস্তবায়ন নেই

নোবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ১ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১১:৪০, ১ জুলাই ২০২১
নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কাটাতে আশ্বাসের বাস্তবায়ন নেই

করোনাকালীন সময়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ২০২০ সালের ৩০ জুন থেকে অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম শুরু হলেও তা ১ অক্টোবর থেকে শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের কারণে ৭৬ দিন বন্ধ থাকে।

নোবিপ্রবির নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে শিক্ষকদের এই আন্দোলনে ব্যাহত হয় অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম। পরবর্তী সময়ে ১৫ ডিসেম্বর আন্দোলন প্রত্যাহার করে ক্ষতি পুষিয়ে দিতে আশ্বাস দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিনের বন্ধে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাপক ব্যাহত হয়েছে। এতে সেশনজটসহ নানা ভোগান্তিতে পড়েছে তারা।বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষকদের এই আন্দোলনের মাধ্যমে করোনায় নানামুখী ক্ষতির সম্মুখীন শিক্ষার্থীদের আরও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনলাইন কার্যক্রমের মাধ্যমে এগিয়ে গেলেও নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে গেছে।

আরো পড়ুন:

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, গতবছরে (২০২০ সালে) থার্ড ইয়ারের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস শুরু করার কথা থাকলেও শিক্ষকদের আন্দোলনে দেরিতে শুরু হয় এবং প্রায় সম্পূর্ণ ক্লাস এখনো বাকি। এমনকি ওই ইয়ারের প্রথম সেমিস্টারের ক্লাসগুলোও এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে শেষ করা হয়নি। তাহলে কিভাবে পুষিয়ে দেওয়া হচ্ছে আসলে? শিক্ষাবর্ষ অনুযায়ী এবছর অনার্স শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা স্বপ্ন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা হবে হবে বলেও এখনো এ বিষয়ে আমার বিভাগ কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুল হাকিম বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস পরীক্ষার ব্যাঘাত ঘটানোকে শিক্ষকরা অমার্জিত এবং একাডেমিসিয়ানদের আন্দোলনের আচরণবিধি লঙ্ঘন বলতে পারেন, তাহলে আমি শিক্ষকদের এই দাবি আদায়ের পদ্ধতিকে নেতিবাচক বলতে পারি না? যেহেতু এটাকে আমি শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে দেখছি। ‘প্রিভেনশন ইজ বেটার দেন কিউর’। ফলাফল না ভেবে পদক্ষেপ নেওয়া হলে সেটা পূর্ণ করার দায়িত্ব শিক্ষকদেরই। যেখানে করোনা আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে, সেখানে এটাকে একটা বাড়তি চাপ বলে বিবেচনা করা যায়। শুধু আশা দেওয়ায় সীমাবদ্ধ না থেকে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবার সময় এখন।

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত মুনা বলেন, আমরা একটি বড় ধরনের দূর্যোগের মধ্যে আছি, কবে পৃথিবী সুস্থ হবে আমরা জানি না। আমাদের উচিৎ সুবিধাজনক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এগিয়ে যাওয়া। পরীক্ষাসহ সব জটিলতায় শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেওয়া। এ ব্যাপার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আরও দায়িত্বশীল আচরণ আমরা প্রত্যাশা করি। প্রশাসনের গাফলতির জন্য শিক্ষর্থীদের পিছিয়ে দেওয়া মোটেই কাম্য নয়।

এফটিএনএস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান মিশকাত বলেন, করোনার কারণে মাস্টার্স ২ বছরেও শেষ করতে পারিনি। জব করতাম জবটাও ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। গত ফেব্রুয়ারিতে এক্সাম হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। এখন আমি জবলেস,  হতাশা কাজ করে অনেক।

কিভাবে ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। আটকে থাকা সেমিস্টারের পরীক্ষাগুলো পর্যায়ক্রমে দ্রুত শেষ করা হবে এবং নতুন সেমিস্টারগুলোও দ্রুত শেষ করে দেওয়া হবে।
 

ফাহিম/মাহি 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়