জবিতে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে
জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন চলতি বছরের ৭ অক্টোবর থেকে আটকে থাকা বিভিন্ন বর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা সশরীরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন অনুষদের ডিন সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর চেয়ারম্যানদের রুটিন প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি পরীক্ষার পরিকল্পনা নিয়ে মিটিংও করা হয়েছে। সশরীরে হলেও করোনার কারণে অন্যান্য সময়ের পরীক্ষা থেকে ভিন্ন পদ্ধতিতে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে নেওয়া হবে পরীক্ষা।
গত ৭ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের সঙ্গে ডিন ও চেয়ারম্যানদের একটি বৈঠকে বিভিন্ন বর্ষের আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা আগামী ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে যদি সার্বিক পরিস্থিতির কারণে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হয়, তবে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি বিভাগ পরীক্ষার রুটিনও প্রকাশ করেছে। অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা আলোচনা করে পরীক্ষার রুটিন দেবেন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, ৭ অক্টোবর থেকে পরীক্ষা শুরু করব। দুই শিফটে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা ভাবনা হচ্ছে। সকালে ৯টা অথবা সাড়ে ৯টায় একটা ও অপরটি সাড়ে ১২টা থেকে শুরু হবে। কোনো বিভাগ মনে করলে দুই শিফটে নিতে পারবে। পরীক্ষার সময় সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে, এক বেঞ্চে একজনের বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে না। আর আমরা প্রত্যেক বিভাগকেই কোয়ারেন্টিন রুম রাখতে বলেছি। যাতে কেই আক্রান্ত হলে আলাদা করে পরীক্ষা নেওয়া যায়। তারপর শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করা ও বিভাগে প্রবেশের সময় সব শিক্ষার্থীর তাপমাত্রা মাপা হবে। এজন্য বিভাগগুলোকে অনুষদ থেকেই ৮টি তাপমাত্রা মাপার মেশিন দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার সময়সূচি বিভাগগুলো তৈরি করবে। সশরীরে পরীক্ষার প্রস্তুতির পাশাপাশি আমরা অনলাইন পরীক্ষার যে নীতিমালা সে হিসেবেও প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হবে। অনলাইন পরীক্ষা নিতে তো কিছু স্কিল দরকার, স্কিলগুলো যাতে আমাদের শিক্ষকদের ডেভলপ করা থাকে, সেটা আমরা করব। যদি করোনা পরিস্থিতির কারণে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়া না হয়, তাহলে ওই একই তারিখে অনলাইনে পরীক্ষা শুরু হবে। একদিনের জন্যও যাতে আমাদের তারিখ পেছাতে না হয় সেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখবো।
এ ব্যাপারে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. চঞ্চল কুমার বোস বলেন, আমাদের বিভাগগুলো ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনুষদে রুটিন জমা দেবে। আর আমাদের পরীক্ষা তো অফিশিয়ালি ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। তবে সেটা তারপরেও যেতে পারে, আর পূজার যেহেতু ছুটি আছে, তাই কলা অনুষদের বিভাগগুলোর ওপর নির্ভর করবে যে তারা কবে থেকে শুরু করবে। হয়তো কোনো বিভাগ ৭ তারিখে শুরু না করে পূজার ছুটির পরও শুরু করতে পারে, এসব বিভাগের ওপর নির্ভর করবে। পরীক্ষার সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে।
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে এটা আনঅফিসিয়াল আলোচনা যে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে এক বিভাগের একাধিক বর্ষকে না এনে পরীক্ষা নিতে হবে। আমার অনুষদের মিটিং আগামী বৃহস্পতিবার দিয়েছি, তার আগে আমি অনুষদের সব বিভাগের চেয়ারম্যানদের বিভাগের একাডেমিক কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষার রুটিন প্রণয়ন করতে নির্দেশ দিয়েছি।
প্রসঙ্গত, পরীক্ষার ঘোষণার পরপরই ঢাকা আসতে শুরু করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে, পরীক্ষা শুরুর আগেই শতভাগ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসবে কি না তা অনেকটাই অনিশ্চিত। এছাড়াও নির্দিষ্ট সময়ে ছাত্রীদের হলে ওঠা নিয়েও রয়েছে সংশয়। এর আগে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে স্মারকলিপি, মানববন্ধন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আল্টিমেটামও দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সৌদিপ/মাহি