ঢাকা     রোববার   ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১৪ ১৪৩১

লাল মাটির ক্যাম্পাস নিয়ে নবীনদের অনুভূতি  

মো. শাহীন আলম  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৩, ১৫ মার্চ ২০২২   আপডেট: ১৩:৪৩, ১৫ মার্চ ২০২২
লাল মাটির ক্যাম্পাস নিয়ে নবীনদের অনুভূতি  

দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নবীনরা এখন বিশ্ববিদ্যালয় আঙিনায় পা দিয়েছেন। নতুন স্বপ্ন নিয়ে নতুন জীবন শুরু হয়েছে তাদের। সামনে শত শত বাধা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে লক্ষ্যের দিকে। নবীনদের পদচারণায় ক্যাম্পাস যেন হারানো যৌবন ফিরে পেয়েছে। 

কখনো কখনো ক্লাস পরীক্ষা ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা, সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়া। হয়তো কোনো একদিন এই সময়গুলো তাদের স্মৃতি হয়ে থাকবে। এই স্মৃতিগুলো কোনো একসময় তাদের স্মরণ করিয়ে দেবে এই যৌবনের কথা। লাল-সবুজের পাদদেশে অবস্থিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীনদের অনুভূতি নিয়ে লিখেছেন মো. শাহীন আলম। 

অনেক আগে থেকে স্বপ্ন ছিল আমি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়বো। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আজকে আমি পঞ্চাশ একর ক্যাম্পাসের নবীন হয়ে এসেছি। লাল-সবুজের এই ক্যাম্পাসে নবীন বরণটাও ছিল উৎসবমুখর। ক্যাম্পাসের প্রতিটি সকাল আমার জন্য মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। দিনগুলো শেষ না হলে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতো। এই লাল পাহাড়ে এসে নতুন পরিবেশ, বন্ধুরা সবাই মিলে ক্যাম্পাস ঘুরাঘুরি, ক্যাফেটেরিয়ায় বসে আড্ডা দেওয়া, এসব কিছুই এক নতুন স্মৃতি। 

আরো পড়ুন:

সারা নুর, শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ আমার জীবনের পাতায় আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কলেজে থাকতেই স্যারদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কত গল্প শুনেছি। তখন থেকেই এই জীবনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা রইলাম। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ সুযোগ পেলাম একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বেছে নিলাম সবুজে ঘেরা এই লাল মাটির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বড় ভাই বোনদের বন্ধন, ছোটদের প্রতি ভালোবাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মনেপ্রাণে ধারণ করে নিলাম এই ক্যাম্পাসকে। 

ক্যাফেটেরিয়ায় সকালের নাস্তা, মুক্তমঞ্চে ক্লাসের মাঝের বিরতির আড্ডা, বিকালবেলা শহীদ মিনারে সবাই মিলে গল্প করা সবই আমাকে বিস্মিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ও তার অন্য সন্তানদের মতো আমাকে আপন করে নিয়েছে। 

আতিফ হোসেন, শিক্ষার্থী, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগ 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নটা অবশেষে বাস্তবে রূপ নিলো৷একটা দীর্ঘ পথ-প্রক্রিয়া শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন পরিবেশে ও ক্যাম্পাসে স্থান পাওয়াটা আমার সৌভাগ্যের৷ক্যাম্পাসের ফুলের ঘ্রাণ, মুক্তমঞ্চ এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আকৃষ্ট করে ভীষণভাবে৷ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুবান্ধব মিলে শহীদ মিনার ও মুক্তমঞ্চে সংগীত পরিবেশন করা৷তা ছাড়া, একজন প্রকৃতি ও পাখি প্রেমী হিসেবে ক্যাম্পাসে কোকিলের ডাক, সবুজ গাছপালা ও ছোট ছোট টিলা, পাখির অভয়ারণ্য স্থান আমাকে মুগ্ধ করে৷আমার জীবনের মধ্যে বড় একটা প্রাপ্তি হলো আমি একজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এই ক্যাম্পাস আমাকে জীবনের গুরুত্ব বুঝিয়েছে৷কৃতজ্ঞ থাকবো আজীবন।

লুনি ত্রিপুরা, শিক্ষার্থী, আইসিটি বিভাগ

বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বপ্নের নাম। এই প্রিয় ক্যাম্পাসের অনুভূতি অকল্পনীয় ও তৃপ্তির। নতুন বন্ধু, ক্লাস, কোরাস গান, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আড্ডা দেওয়া এবং সিনিয়রদের সাথে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণে আমি মুগ্ধ। সোনালি রোদের প্রতিটি সকালই এখন শুরু হয় ক্যাম্পাসে যাওয়ার অপেক্ষায়। শ্রেণিকক্ষ, ক্যাফেটেরিয়া, মুক্তমঞ্চ, লাইব্রেরি, নীলবাস এখন আমার জীবনের নিত্যদিনের অংশ। 

‘আমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা পরিচয় এবং একই বৃহৎ প্রাপ্তি। সৃষ্টিকর্তার অশেষ শুকরিয়া জীবনের এমন সুন্দর অধ্যায়ের জন্য। এই যাত্রার শেষটা যেন আরও রঙিন হয় সৃষ্টিকর্তার নিকট সেই প্রত্যাশা করছি।

জান্নাতুল ফেরদৌস বৃষ্টি, শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ 

শিক্ষাজীবনের প্রায় ১২ বছরের গণ্ডি পেরিয়ে মুক্ত জ্ঞানের আলোয় উচ্চশিক্ষা অর্জনের প্রাথমিক স্তরে পা রেখে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে নিজেকে খুবই অসহায় লাগতো যে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে নাকি কিন্তু সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন। সবার সাথে আড্ডা, বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, টঙ দোকানের চা, বন্ধুদের সাথে আবেগ, সিনিয়র জুনিয়র সর্ম্পক সব মিলিয়ে ক্যাম্পাস লাইফ। যেটা কেবল একজন পাবলিকিয়ান উপলব্ধি করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নবীবদের বরণ করে নেওয়ার জন্য এত আয়োজন। সত্যিই মনোমুগ্ধকর। আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সবার সহযোগিতায় আমি এবং আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।

মাহফুজুল হক, শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ

শরীফ/মাহি 


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়