ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

আইইউবিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা

আইইউবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৭, ২০ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ১৭:৪১, ২০ আগস্ট ২০২৩
আইইউবিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা

ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে (আইইউবি) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে “Bangabandhu’s Bangladesh” শিরোনামে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও একটি আলোচনাসভা গত ১৬ আগস্ট আইইউবি লাইব্রেরির বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে এ বিশ্ববিদ্যালয়। এ সময় আইইউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. তানভীর হাসান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি মুহম্মদ নুরুল হুদার উপস্থিততে রচনা প্রতিযোগিতায় স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। স্কুল পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন সানি ডেল স্কুলের জায়মা জায়ান। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিহা এবং প্রথম স্থান অর্জন করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী দীপ্তি।

অনুষ্ঠানে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রাজু তার বক্তব্যে জানান যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের বেশ কিছু সদস্যই মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক তানভীর হাসান উপাচার্য হিসেবে ২০২১ সালে যোগদানের পর থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনায় নতুন মাত্রা পায় এবং কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানানোর জন্য ব্যাপক জোর দেওয়া হয় ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানার আগ্রহ বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু কোর্স সংযুক্ত করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক তানভীর হাসান তার বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত তার পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করেন। উপাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, এই মাসকে আমাাদের জাতীয়ভাবে শোক-শক্তি-জাগরণের মাস বলা দরকার। ১৯৫২ থেকে ১৯৭৫ এর ইতিহাসের এই শোকগুলোকে কীভাবে শক্তিতে জাগরণ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা দরকার আমাদের।

অধ্যাপক তানভীর হাসান তার বক্তব্যে আরো তুলে ধরেন যে, বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের একটি বিষয় আশঙ্কা সৃৃষ্টি করে, কারণ বর্তমান সময়ে তরুণ-তরুণীরা অনর্গল বাংলা কথা বলতে পারে না। এই বিষয়টি আমাদের সকলের জন্য লজ্জার। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ করেন শিক্ষার্থীদের অনর্গল বাংলা কথা বলতে উৎসাহ প্রদান করতে।

মুখ্য আলোচক কবি মুহম্মদ নরুল হুদাও তার বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করেন এবং শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। অধ্যাপক তানভীর হাসানের বক্তব্যের রেশ থেকেই তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাষা জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই দ্বায়িত্ব নিতে হবে। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন জাতীয় কবি নজরুলের কবিতার বীর সত্তার মেটাফোর এবং বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন স্বাধীনতার প্রতীক। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে জানতে হলে সংবিধানের নান্দনিকতা এবং গণতন্ত্রকে জানতে হবে। কারণ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম কারণ গণতন্ত্রের অধিকার আদায়।

প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আবু তাহের তার বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরেন এবং উল্লেখ করেন যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের অধিকারের কথা বলতেন বলেই তার ৫৫ বছরের জীবনে দীর্ঘ ১ যুগ জেল খেটেছেন। বঙ্গবন্ধু আজীবন সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আবু তাহের বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বই থেকে কিছু ঘটনা তুলে ধরেন। 

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হত্যা নজিরবিহীন নয়; কিন্তু স্বজন-পরিজনসহ এমনকি ১০ বছরের ছোট শিশু রাসেলকে হত্যা কল্পনাতীত ঘটনা। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলা তাদের জরিপে বঙ্গবন্ধুকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। যে বাঙালির পূর্বসূরী হিসেবে এমন তিনজন মহান ব্যক্তি রয়েছে, সেই বাঙালির কখনও পথ হারানো উচিত না। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এই ভুলটিই জাতি করেছিল।

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে যে স্বাধীনতা রক্ষা কঠিন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে সেটিই প্রমাণিত হয়েছে। এ সময় উপ-উপাচার্য আইইউবি থেকে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

ইসতিয়াক হোসেন/ফিরোজ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়