ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

‘আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়’

মো. মুরাদ হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩   আপডেট: ২৩:২৩, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
‘আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়’

বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস একটি সচেতনতামূলক দিন, যেটি বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বর আত্মহত্যা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশে ২০০৩ সাল থেকে পালন করা হয়। এই দিবসটি পালন করতে আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থার সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একসঙ্গে কাজ করে।

২০১১ সালে আনুমানিক ৪০টি দেশ এই দিবসটি উদযাপন করে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। দেশে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা মাত্রাতিরিক্ত। এর কারণ, প্রতিকার নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরেছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) সংবাদদাতা মো. মুরাদ হোসেন

আত্মহত্যার চিন্তা জটিল ও বহুমাত্রিক 
আত্মহত্যার চিন্তা জটিল এবং যেসব কারণ আত্মহত্যার দিকে পরিচালিত করে তা আরও জটিল ও বহুমাত্রিক। কোনো একক কারণ সবার জন্য সমানভাবে কাজ করে না। মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা যেমন- উদ্বেগ এবং বিষণ্নতাও এক্ষেত্রে অবদান রাখে। আমরা যা জানি তা হলো যে, কিছু নির্দিষ্ট কারণ এবং জীবনের ঘটনা আছে, যা কাউকে আত্মহত্যার জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। সামাজিক কারণগুলো হতাশা এবং মানসিক অসুস্থতার জন্য দায়ী। সুতরাং সামাজিক কারণগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যা সংঘটনের জন্য দায়ী। আত্মহত্যার কারণগুলো বাইরে থেকে যতটা দেখা যাচ্ছে, সমস্যা তার চেয়েও গভীর। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে এক দিনে এই ভয়ংকর মানসিক ব্যাধির সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে সরকারের নানান পদক্ষেপের কারণে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার আশা জাগছে। এর মধ্যে একটি হল মানসিক স্বাস্থ্য আইন প্রণয়ন। আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমাদের শিক্ষক এবং বাবা মায়েদের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশে সকল স্তরের শিক্ষকদের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুকালে বাচ্চাদের উপর বাবা-মায়ের প্রভাব যেমন বেশি থাকে, কৈশোরে সেই দায়িত্ব বর্তায় শিক্ষকদের উপর। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিক গঠনে তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যও বেশি।কার্যকর মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য ক্লিনিক্যাল সুবিধার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সঠিক শিক্ষাব্যবস্থা, বেকারত্ব হ্রাস ইত্যাদি পদক্ষেপ নিলে অনেকটাই স্বাভাবিক হবে।
- সুমন সরকার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

একটি আত্মধ্বংসী সিদ্ধান্ত    
আত্মহত্যা মানে একটি সুন্দর জীবনের অনাকাঙ্ক্ষিত ও অকাল মৃত্যু। কিন্তু আত্মহত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশে পুরুষের আত্মহত্যার হার বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মহত্যার ৯৫ ভাগ কারণ মানসিক আর ৫ ভাগ অন্যান্য। বর্তমানে আত্মহত্যার মূল কারণ বলা যায় প্রতিকূল সময় ও প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব। এছাড়াও বিষণ্নতা, সিজোফ্রেনিয়া (কাল্পনিকভাবে কানে গায়েবী আওয়াজ আসে), মৃগীরোগ, অস্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব, নেশা জাতীয় দ্রব্যগ্রহণ। আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তির মধ্যে যে বিষয়গুলো দেখা যায়- যাদের ব্রেইনে সেরোটোনিন নামক হরমোন কম নিঃস্বরণ হয় বা কম থাকে তাদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকে। নিজেকে অন্যের উপর বোঝা মনে করে। পৃথিবীতে তার প্রয়োজন নেই মনে করে। বিভিন্নভাবে আত্মহত্যার কথা প্রকাশ করে। নিজেকে সবসময় একাকিত্ব রাখে। তার দিয়ে কিছুই হবেনা এমন চিন্তাভাবনা করে। নিজের প্রতি ঘৃণা ও অসংলগ্ন আচরণ করে। আত্মহত্যার জন্য ব্যবহৃত বিষ, রশি, ঘুমের ওষুধ লুকিয়ে রাখে। কান্নাকাটি, কম ঘুম এবং নিজের প্রতি অযত্নশীল হয়। তবে এ সমস্যা প্রতিরোধে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। যেমন: কারো মধ্যে উপরের আচরণগুলো দেখা গেলে তাকে উপহাস, ঠাট্টা করা যাবে না। পরিবারের মধ্যে এমন আচরণ কারো মধ্যে দেখা গেলে বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে এবং মানসিক বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে, আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে জানতে হবে। তাকে সময় দিতে হবে এবং বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সম্পর্কে কোনো পোস্ট দেখলে, অতিদ্রুত তার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে, তাকে কখনই একা রাখে যাবে না ও আত্মহত্যার জিনিসগুলো সরিয়ে রাখতে হবে। আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তির নিজেরও কিছু করণীয় রয়েছে। যেমন: আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসলে অন্যের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে এবং নিজে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে, জীবনে ভালো-খারাপ উভয় সময় আসবে তাই বলে খারাপ সময়ে ভেঙে পড়া যাবে না। জীবনে চলার পথে নানা রকম সমস্যা আসবে, সমস্যাগুলো সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে, জীবনকে অবহেলা না করে নিজেকে সময় দিন, জীবন আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিবে। কিছু বিষয়ে আমাদের পরিবার ও সমাজকে ভূমিকা রাখতে হবে। বিনোদনের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে, কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ ও বিক্রয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, ধর্মীয়ভাবে আত্মহত্যার কুফল সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। আত্মহত্যা প্রতিরোধে সবাইকে মনে রাখতে হবে- আত্মহত্যাই একমাত্র সমাধান নয়।
- কে. এম. বিপুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

আত্মহত্যার সর্বোচ্চ শিকার তরুণ প্রজন্ম
একজন মানুষ জন্মগতভাবে নিজেকে সকল প্রকার প্রতিকূলতা থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। কিন্তু জীবনে চলার পথে যখন নিজের অভিযোজন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তখন তীব্র ইচ্ছে জাগে নিজেকে হনন করার। এরই ধারাবাহিকতায় অনেকেই হারিয়ে যায় আত্মহত্যা নামক মারাত্মক ব্যাধিতে। আমার মতে, আত্মহত্যা সম্প্রতি ব্যধিতে পরিণত হয়েছে যার সর্বোচ্চ শিকার বর্তমান তরুণ প্রজন্ম। তরুণদের হার না মানার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস কেমন যেন কালশিটে হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য আমাদের সমাজ ব্যবস্থা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, পারিবারিক কলহ এবং অনেক ক্ষেত্রে আমরাই দায়ী। অতিরিক্ত ভার্চুয়াল জগৎ আমাদের বাস্তবিক সম্পর্কের বন্ধনের আকর্ষণ কমিয়ে দিয়েছে। আমরা একে অপরের অনুভূতিগুলোকে স্পর্শ করতে পারছি না। তাই আত্মহননের ঘটনায় একটি সম্ভাবনাময় প্রাণ যখন আমরা হারিয়ে ফেলি তখন তার বিগত দিনগুলোতে দৃষ্টিপাত করি আর ভাবি- তার মানসিক স্বাস্থের যত্ন, অল্প আলাপচারিতা হয়তো সেই সহপাঠী, ভাই, বোন, অথবা প্রিয়জনকে বাঁচিয়ে রাখতে পারত। অনেকগুলো সময়-দিন-মাসের বাস্তবিক জীবনের পারিবারিক দ্বন্দ্ব, বিরহ, বিচ্ছেদ, হতাশা, একাকিত্ব নামক ভয়ানক সব শব্দের ফলাফল এই আত্মহত্যা। এর থেকে বাঁচতে সবার প্রথম ‘আমিত্ব’কে প্রাধান্য দেওয়া। নিজের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া, নিজেকে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করা, কঠিন পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেওয়া। সর্বদা মনে রাখতে হবে খারাপ সময় দীর্ঘস্থায়ী নয়; দুঃসময় কেটে যায়, সুদিন আসে।
- আজমেরি কণা, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আত্মহত্যার আরেক নাম অনাকাঙ্ক্ষিত সমাপ্তি
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে উত্থান-পতন কিংবা এগিয়ে যাবার পথে বিভিন্ন বাধা আসে। যারা এগুলো মেনে নিয়ে লড়াই করে টিকে থাকতে পারে তারা জীবনের আসল স্বাদ আস্বাদন করতে পারে। আর যারা পারে না তারা নিজেদের হারিয়ে ফেলে কোনো এক অমানিশার অন্ধকারে। যেটাকে আমরা একটি শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা করি- আত্মহত্যা। আত্মহত্যার কারণ ৯৫ ভাগ মানসিক এবং বাকি ৫ ভাগ অন্যান্য। আত্মহত্যার বেশ কিছু কারণ উল্লেখযোগ্যভাবে ইতোমধ্যেই সবার সামনে চলে এসেছে।

বর্তমান আর্থসামাজিক কারণে আমাদের জনজীবনে দুর্ভোগের কমতি নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রাস্ফীতি, চাকরির বাজারে হাহাকার, বিভিন্ন কারণে মানুষের মাঝে বাড়ছে হতাশা। যার ফলস্বরূপ বাড়ছে আত্মহত্যা। আত্মহত্যার প্রবণতা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিশেষ লক্ষ্যণীয়। এই তরুণ প্রজন্মকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করতে পারি। ১. মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা তার নিচের এবং ২. স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং চাকরিপ্রত্যাশী। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের সময়টুকুতে ছেলেমেয়েদের মধ্যে চিন্তা বা বিবেকের পরিপক্কতা আসেনা, তারা আবেগে চলে এবং হুটহাট সিদ্বান্ত নিয়ে ফেলে। উচ্চমাধ্যমিকের পরের ধাপে এরা তখন কেবল দায়িত্বগুলো সম্পর্কে বুঝতে শেখে, পরিবারের দায়িত্ব নিতে শেখে, চাকরি পাবার চেষ্টা করতে থাকে। এক্ষেত্রেও কেউ কেউ সফল হয়, আবার কেউ কেউ পিছিয়ে পড়ে। কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া বা ভর্তি হওয়ার পরও একটা ভালো রেজাল্ট সঙ্গে চাকরি পাওয়া সব মিলিয়ে প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। পরিবার, আত্মীয়স্বজনের প্রত্যাশা পূরণ করতে করতে হিমশিম খেতে হয়। এমনকি প্রতিবেশীদেরও কটু কথা শুনতে হয়। যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন তারা এই বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। 

উচ্চমাধ্যমিকের আগে বা পরে যারাই এসমস্ত সিদ্ধান্ত নেয়, এটা শুধু তাদের জীবনটাকেই শেষ করে। উপরন্ত আর কোনো উপকার হয় না তাদের পরিবারের জন্য। এই দুই শ্রেণির বাইরে আরও এক শ্রেণি আছে যাদের আত্মহত্যার কারণ পারিবারিক কলহ বা দারিদ্র্য বা সামাজিক কোনো কারণ। সর্বোপরি কয়েকটি কারণ সাবর্জনীনভাবে উল্লেখ করতে পারি। সেগুলো হলো: নিজেকে একা করে ফেলা বা একাকিত্বে ভোগা, নিজেকে পরিবার বা অন্য কারও ওপর বোঝা মনে করতে থাকা, নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করা, শিক্ষিত নাগরিকদের মধ্যে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাওয়া, পারিবারিক কলহ, সংসারে অভাব অনটন বা এর মূল কারণ দারিদ্র্য।

আত্মহত্যা মানে একটি সুন্দর জীবনের করুণ ও অনাকাঙ্ক্ষিত সমাপ্তি। যে জীবনকে আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। তবে এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য জনস্বাস্থ্য সমস্যা। কথায় আছে, Prevention is better than cure অর্থাৎ প্রতিরোধ প্রতিকারের চেয়ে উত্তম। আত্মহত্যার ক্ষেত্রে প্রতিকার বিষয়টি অসামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ মৃত মানুষকে আর ফিরে পাওয়া সম্ভব না। কেবল আফসোস করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকেনা তখন। একটি জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই জীবন রক্ষার্থে কিছু প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। যেমন আত্মহত্যাপ্রবণ লোক জীবন নিয়ে হতাশ থাকে এবং তার কথায় সব সময় আত্মহত্যার কথাই চলে আসে। তাই তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে বা কাউন্সেলিং করে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। যারা নিজেকে একা মনে করে বা সব সময় একাকিত্বে ভোগে তাদেরকে একটু সময় দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাদেরকে এটা বিশ্বাস করাতে হবে আসলে তারা একা নয়, সবাই আছে তার সঙ্গে। বেকারত্ব দূর করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে, তরুণদের মধ্যে যারা নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করে তাদের নেতিবাচকতা থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করতে হবে, দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে, সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে, পারিবারিক কলহ সৃষ্টির কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং সমাধানের উপায় বের করতে হবে। মাদকাসক্তির কারণে অনেকে আত্মহত্যা করে, মাদককে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মাদক উৎপাদন ও সরবরাহ উভয়ই বন্ধ করতে হবে, ছেলেমেয়ে কোথায় যাচ্ছে, কাদের সঙ্গে মিশছে, পরিবারের লোকদের বিশেষ করে বাবা-মাকে এসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে, বেশি আবেগপ্রবণতা থেকে বের হয়ে বাস্তবিক চিন্তা করা এবং বাস্তবতাকে মেনে নেয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। 

আত্মহত্যার প্রবণতাই যেখানে গোপন রয়ে যায়, সেখানে গোড়াতেই ধামাচাপা পড়ে যায় আত্মহত্যার কারণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে সতর্ক থাকার বিষয়গুলো। প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক অস্থিরতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জনসংখ্যা সংক্রান্ত জটিলতার পাশাপাশি পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে জীবন সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই অতিরিক্ত আবেগের বিড়ম্বনা ও নিরাশাকে রুখতে পরস্পরের মাঝে নৈতিকতার শিক্ষা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের প্রথা গড়ে তোলা জরুরি। নেতিবাচকতা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করা উচিত এবং আশেপাশের মানুষগুলোকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করা উচিত। আশেপাশের মানুষগুলোর খোঁজখবর নেয়া উচিত। তাহলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলে মনে করি।
- শামছুন্নাহার ঋতু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

/ফিরোজ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়