ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

গ্রাম বাংলায় নবান্নের আগমন

হাবিবুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩১, ১৮ অক্টোবর ২০২৩  
গ্রাম বাংলায় নবান্নের আগমন

আলস্য ভরা চোখ খুলে জানালে দিয়ে বাইরে তাকাতেই আবিস্কৃত হল নতুন ভোর। চারদিকে কুয়াশায় ছেয়ে গেছে। আলস্যতাকে পাশে ঠেলে বাইরে বের হতে না হতেই দেখা মিলল প্রকৃতির পরিবর্তন। চারদিকে ছেয়ে গেছে ঘন কুয়াশায়। শিশিরে জমে আছে ঘাসগুলো। বুঝতে বাকি থাকে না, প্রকৃতি শীতের বার্তা নিয়ে হেমন্তের আগমন ঘটিয়েছে।

ভোরের সূর্যটা এ সময় একটু বেশিই সোনালি; লাল নয়, হলুদও নয়। সঙ্গে হালকা শীত। ভোরের কুয়াশা ভেদ করে যখন সোনাঝরা রোদ উঁকি মারে পুবাকাশে, তখন আক্ষরিক অর্থেই যেন স্বর্গ নেমে আসে বাংলার গায়ে, বিলে, মাঠে, নদীর বাঁকে, পাহাড়ের কোলে কিংবা ধু-ধু প্রান্তরে। এসময় ভোর থেকেই ব্যস্ত সময় পার করে বাংলার কৃষক-কৃষাণীরা। নতুন ধান ঘরে তোলার প্রতিক্ষার সমাপ্তি ঘটে তাদের।

গ্রামে গ্রামে ধুম পড়ে যায় নতুন ধান ঘরে তোলার। দিকে দিকে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। এ উৎসব বাঙালি জাতিকে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করে। বাঙালির জনজীবনে অনাবিল আনন্দ, সুখ ও সমৃদ্ধির বার্তা নিয়ে আসে।

বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে নবান্নের সঙ্গে। কৃষি নির্ভর এই সমাজে কৃষি জমির সঙ্গে আমাদের নিবিড় সম্পর্ক সূত্রেই নবান্ন হয়ে উঠেছে বাংলার লোকায়ত উৎসব। আনন্দে মেতে ওঠে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষগুলো। নাইওরে যায় গ্রামের বধু। মাঠ ভরা ধানে সোনালি ছোঁয়া লাগলেই গ্রাম-বাংলায় বোঝা যায় নবান্ন আসছে।

কার্তিকের শেষ সপ্তাহ থেকেই শুরু হয় ধান মাড়াইয়ের কাজ। কৃষকের প্রাণে উঁকি দেয় নতুন সম্ভাবনা, নতুন দিনের। আশা বাড়ে আরও কিছুদিন বাঁচার। নতুন ধানের আগমনে চলে বাড়িঘর, ঢেঁকিঘর নিকানোর কাজ। নতুন চাল থেকে তৈরি হয় ভাঁপা, চিতুই, দুধ চিতুই, পুলি, পায়েস প্রভৃতি।

এছাড়াও নবান্নে গ্রামে গ্রামে নানা ধরনের মেলা, সার্কাস ও লাঠি খেলার আয়োজন করা হয়। কখনও কবিগান, সাধুর মেলা, জারি-সারিও আয়োজন হয়ে থাকে।

লেখক: শিক্ষার্থী, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়