ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

যেমন কাটছে নব্য ঢাবিয়ানদের পূজার ছুটি

আসাদুজ্জামান, ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ১৮ অক্টোবর ২০২৩   আপডেট: ১৫:৩৭, ১৮ অক্টোবর ২০২৩
যেমন কাটছে নব্য ঢাবিয়ানদের পূজার ছুটি

চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। একটু ফুরসত পেয়েছে নগরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা। ক্লাস, এসাইনমেন্ট, নানাবিধ ব্যস্ততায় ভাটা পড়েছে এই বন্ধে। 

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজার বন্ধ কার্যত ১৩ তারিখ থেকে শুরু হয়ে আরও অন্যান্য বন্ধ এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন সহ ২৮ তারিখ পর্যন্ত। লম্বা এই অবকাশে দলে দলে ঘরে ফিরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে সবচাইতে বেশি আনন্দ বোধ হয় নব্য ঢাবিয়ানদের।

গত ১০ আগস্ট থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে এবং ২০ তারিখ থেকে ক্লাস শুরু হয়ে এই প্রথম এত লম্বা ছুটি। হলের গণরুমগুলো সব খালি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব উপস্থিতি ঢাবিয়ান হয়ে ঘরে ফেরাদের। ২২-২৩ সেশনের এসব শিক্ষার্থীদের পূজার ছুটি কেমন কাটছে- চলুন সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজি নব্য ঢাবিয়ানদেরই কাছে। 

অঙ্গনা পাল এবার ভর্তি হয়েছেন ইতিহাস বিভাগে। তিনি জানান, ‘যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়াটা একটা স্বপ্ন ছিল। অ্যাডমিশন নামক যুদ্ধের মাধ্যমে আমি সেই স্বপ্নকে ছুঁতে পেরেছি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পর পূজার ছুটিতে বাড়ি ফেরার আনন্দটা আরও দ্বিগুণ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গতবছরও পুজোতে অনেক হাতাশায় ভুগতে হয়েছে যে, আদৌ কোথাও চান্স পাবো কিনা বা ঢাবিকে পাবো কিনা ইত্যাদি চিন্তা ভাবনাকে ঘিরে। সৃষ্টিকর্তার অশেষ করুণায় ঢাবিয়ান হতে পেরেছি। আমার কাছে পূজার আনন্দটা এবার একটু বেশিই। সৃষ্টিকর্তার নিকট অনেক কৃতজ্ঞতা।’

মোহাম্মদ নাহিদ হাসান নামে বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী জানান, ‘আলহামদুলিল্লাহ ভালোই লাগছে। অনেকদিন পর বাসায় এসে প্রিয়জনদের মুখ দেখতে পাওয়া অনেক সুখের। যেটা কোটি টাকা দিয়েও কেনা সম্ভব হয় না। দিনশেষে পাখি যেমন আপনঘরে ফিরতে পেরে আনন্দিত হয়ে ডানা ঝাপটায়,এটাও ঠিক একই অনুভূতি।’

জিদান সরকার নামে দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ ভালো। অনুভূতিটা অন্য রকম। কারণ নিজের একটা পরিচয় নিয়ে ফিরতে পেরেছি বাড়িতে। আত্মপরিচয়ের স্বাদ অনুভব করে যান্ত্রিক শহর থেকে কিছুটা সময় ক্লান্তি অপসারণের মাধ্যমে কাটছে এই ছুটি।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অরিত্রি চক্রবর্তী প্রাপ্তি জানান, ‘অনেক অনেক ভাল কাটছে। অনেকদিন পর বাসায় এসে অন্য রকম লাগছে। বাসাকে একদম অন্যভাবে আবিষ্কার করলাম। নিজের বাসার মত স্ট্রেসলেস জায়গা আর হয় না। বাসার সামনেই পুজো হয়। তাই বিকেল হলেই ওখানে গিয়ে আড্ডা হয়, ক্যারাম খেলি। সব মিলিয়ে দারুণ।’

এত এত ভালো অনুভূতির পেছনেও আছে কিছু ব্যথাতুর অপ্রাপ্তি। এই বন্ধে অনেকেই বাড়ি গিয়ে একাকী বোধ করছেন। দীর্ঘ দুই মাস ঢাকার পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পর নিজের বাড়ি অচেনা লাগছে অনেকের কাছে। পুরনো সঙ্গী-সাথীরা এখন একেক জন একেক জায়গায়। অচেনা লাগছে পরিবেশ, মানুষ। এমনই অনুভূতি জানিয়েছেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী পাভেল আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘ঘরে ফেরার আনন্দ অন্য রকম। তবে বাড়িতে এসেই আবার ভার্সিটিতে ফেরত যেতে ইচ্ছে করছে। আগের মতো আর কিছু নেই। আগের বন্ধু-বান্ধবদের আচরণে পরিবর্তন হয়েছে। আগের মতো আন্তরিকতা নেই। ভার্সিটিতে প্রতিদিন সবার সঙ্গে দেখা সাক্ষাত কথাবার্তা হতো, ভালোই যেতো। একাকীত্ব কি বুঝতে পারিনি। বাড়ি এসে বড় একা একা লাগে।’

আসাদুজ্জামান/মেহেদী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়