ঢাকা     শনিবার   ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৬ ১৪৩১

ফরম পূরণ প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ রাবি শিক্ষার্থীদের

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ১৯ অক্টোবর ২০২৩  
ফরম পূরণ প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ রাবি শিক্ষার্থীদের

প্রতি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণ প্রক্রিয়া নিয়ে নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ফরম পূরণে আধুনিক ও সহজ নিয়ম চালুর তাদের।

জানা যায়, প্রতি সেমিস্টারে পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রথমে বিভাগ থেকে ফরম সংগ্রহ করতে হয়। এরপর পূরণ করে সংশ্লিষ্ট হলে জমা দিয়ে প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর শেষে ফর্মগুলো নিজ নিজ বিভাগে টাকা জমা দানের রসিদসহ জমা দিতে হয়। তারপর ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করতে হয়। বিভাগ থেকে ফরমগুলো যাচাই-বাছাই করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতরে প্রেরণ করে। এতে ভবন থেকে ভবনে, দফতর থেকে দফতরে যাওয়ার ফলে সময় অপচয়সহ শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, আমরা বিভাগ থেকে হলে স্বাক্ষরের জন্য ফর্ম নিয়ে গেলে অনেক সময় শিক্ষক পাই না। তখন ফর্ম রেখে যেতে বলা হয়। পরের দিন এসে সেই ফর্ম সংগ্রহ করে বিভাগে জমা দিতে হয়। আবার ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গেলে অনেক সময় দীর্ঘ লাইন ধরতে হয়। এছাড়া লাস্ট ডেটে ফর্ম পূরণ করার ক্ষেত্রে এ সিস্টেম আরও জটিলতা সৃষ্টি করে। দুই দিন ধরে ফর্ম নিয়ে এই ভবন থেকে ওই ভবনে দৌড়াদৌড়ি করার ফলে আমাদের সময় ও পড়ালেখার ক্ষতির পাশাপাশি অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়।

ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ফর্ম পূরণ অনলাইনে করা হলেও পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক হয়নি। আমরা অনলাইনে ফর্ম পূরণ করলেও ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা জমা দিতে হয়, যা একটা ভোগান্তি। কারণ ব্যাংকে ১২টার পর চরম ভিড় হয়। ব্যাংকে ফর্ম পূরণের জন্য একটিমাত্র কাউন্টার থাকায় কখনও কখনও ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। অন্যদিকে বিভাগ থেকে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ও হল প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর নিতে অনেক সময় চলে যায়। আমরা একদিনে ফর্ম পূরণের কাজ শেষ করতে পারি না। এ থেকে মুক্তি পেতে সবকিছু অনলাইনভিত্তিক করা হোক।

সমাজকর্ম বিভগের শিক্ষার্থী মেহেদী সজীব বলেন, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফর্ম পূরণ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার নাম। এ সময়ে সমস্যায় পড়তে হয় না এমন সংখ্যা পাওয়া দুষ্কর। প্রত্যেকবারই হল থেকে ডিপার্টমেন্ট, ডিপার্টমেন্ট থেকে ব্যাংক, ব্যাংক থেকে হল, হল থেকে আবার ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে এ দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। বর্তমানের ডিজিটালাইজেশন ও তথ্য প্রযুক্তির এ সময়ে এসেও প্রাচীন পদ্ধতি কীভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান থাকতে পারে তা-ই প্রশ্ন!

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এমন ইঁদুর দৌড়ে অভ্যস্ত করেই বছরের পর বছর পার করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ পরিস্থিতি নিরসনে তেমন কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না। স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ফর্ম পূরণের যাবতীয় ফি নেয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। স্মার্ট কার্ডের পরিপূর্ণ সেবা নিশ্চিত করে ফর্ম পূরণের কাজ যথাসম্ভব অনলাইনে করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আলমগীর হোসাইন সরকার বলেন, এটা অনলাইনে করার কার্যক্রম চলছে। আর এখন তো অনেক শর্ট। পরিবারে যেমন অভিভাবক থাকে, হলের প্রাধ্যক্ষও তেমন অভিভাবক। তার কাছে টাকা জমা দিয়ে একটা স্বাক্ষর নিতে তোমার অসুবিধার কি আছে!

প্রাধ্যক্ষের হলে না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, হাউজ টিউটরকে দিয়ে আসলে তিনি স্বাক্ষর নিয়ে রাখবেন। পরদিন গিয়ে নিয়ে আসলেই হলো। ব্যক্তিগতভাবে এরকম অনেকেই আমার কাছে আসে আমি সাহায্য করি।

তবে উপ উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবির বলেন, এ বিষয়ে সেরকম কোনো কার্যকম নেওয়া হয়নি। তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর ভালো বলতে পারবে ।

 শাকিবুল/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়