ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ক্যাম্পাসে শ্লীলতাহানি: অভিযুক্ত বলেন ‘তাকে পছন্দ করি, মুচলেকা দিতেও রাজি’

জবি সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৪, ১৯ অক্টোবর ২০২৩   আপডেট: ২২:১৫, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
ক্যাম্পাসে শ্লীলতাহানি: অভিযুক্ত বলেন ‘তাকে পছন্দ করি, মুচলেকা দিতেও রাজি’

(ডানে) অভিযুক্ত সৈকত, (বায়ে) ভুক্তভোগী শায়লা সাথী

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছোট পর্দার অভিনেত্রী ও ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শায়লা সাথীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে সূত্রাপুর থানা পুলিশ আটক করেছে। অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সৈকত বলেন, ‘আমি ওই মেয়েকে পছন্দ করি। কিন্তু সে আমার ডাকে সাড়া দেয় না।’ এরপর সৈকত ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিতেও রাজি হন। 

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরের সামনে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মেহেদী হাসান সৈকত দর্শন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়াও সে জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইনের অনুসারী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

অভিযুক্তকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সূত্রাপুর থানার উপ-পরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে ওই ছেলেকে আটক করেছিলাম। ভুক্তভোগীও থানায় এসেছিল মামলা করতে। কিন্তু তাদের কাছে সবকিছু শোনার পর দেখলাম ঘটনাস্থল কোতোয়ালি থানার অধীনে। তাই আমরা মামলা না নিয়ে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তকে কোতোয়ালিতে পাঠিয়েছি। 

ভুক্তভোগী শায়লা সাথী বলেন, এই ছেলে অনেক দিন ধরে আমাকে জ্বালাতন করছিল। মেসেঞ্জারে বাজে ও অকথ্য ভাষায় মেসেজ দিত। আমি পাত্তা দিতাম না। আজ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমি শান্ত চত্বরে সুন্দর মুহূর্তকে ধারণ করতে নিজের ভিডিও করছিলাম। এসময় মেহেদী হাসান সৈকত নামে ওই ছেলেটি আমার পেছন থেকে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। আমি ভয় পেয়ে আমার পাশে থাকা ব্যাচমেট বিলাস দাসকে জানালে, তাকেও মারধর করে সৈকত।

তিনি আরও বলেন, আমি মিডিয়ায় অভিনয় করি। ক্যাম্পাসে আমার ফ্যান-ফলোয়ার দাঁড়ানো ছিল। এসময় আমাকে স্পর্শ করেছে। আমি শকড। কোনও সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ এমন করতে পারে না। এই ক্যাম্পাসে আমি নিরাপদ কি-না জানি না। এ ঘটনায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই। আমি মামলা করতে থানায় যাচ্ছি।

ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার নাট্যকলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বিলাস দাস বলেন, আমার ব্যাচমেট নিজের ভিডিও করছিল। এসময় সৈকত তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। শায়লা ভয় পেয়ে বিষয়টি জানালে সৈকত আমারও গায়ে হাত তোলে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের কর্মী নয় দাবি করে এসএম আকতার হোসাইন বলেন, আমার কর্মী যে কেউ দাবি করলেই তো আর সে হয়ে যায় না। আমাদের কমিটি যখন দেয়, সে তখন আসতো মাঝেমধ্যে। তার মানসিক সমস্যা আছে। এজন্য তার বাবা তাকে মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাও করিয়েছিল। কিন্তু সে ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা লিখিত বক্তব্য পেয়েছি। সিসি ক্যামেরা দেখা হবে। অভিযোগের প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া, ওই ছেলেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী শায়লা সাথীর শুরু মডেলিংয়ের মাধ্যমে। এরপর কাজ করেন মিউজিক ভিডিও ও নাটকে। বর্তমানে তিনি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন ছোট পর্দায়। ‘তোকে বউ বানাব’, ‘আই হেট ইউ’, ‘গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে’-এসব নাটকে তিনি অভিনয় করেন।

মেহেদী/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়