ঢাকা     রোববার   ০৭ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৩ ১৪৩১

জবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ২ নভেম্বর ২০২৩  
জবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

তুচ্ছ ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নারী শিক্ষার্থীসহ দুইজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা হলেন- জবির ১৫তম ব্যাচের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে তহমিনা জেরিফ মিশু এবং একই ব্যাচের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী ছোলায়মান খান।

এ ঘটনায় বুধবার (১ নভেম্বর) ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর পৃথক দুটি অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, গত সোমবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় টিএসসির পেছনে ছোলায়মান ও তার বন্ধু মিশু চা শেষ করে কাপ দিতে যায়। তখন সেখানে বসার টুল না থাকায় এটা নিয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। ছোলায়মান থামাতে গেলে সাদেক আক্রমণাত্ম হয়ে ওঠে। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১২ ব্যাচের হিমু ও শুভসহ আরও ৪-৫ জন শিক্ষার্থী। তারা পূর্বের কোন ঘটনা না জেনেই তাদের উপর চড়াও হয় এবং বাকবিতণ্ডা শুরু করে। পরিস্থিতি খারাপ দেখে ভুক্তভোগীরা স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করলে তারা তাদের বাঁধা দিয়ে বেধড়ড়ক মারধর শুরু করে। এতে ছোলায়মান মাথায়, হাতে এবং ঘাড়ে প্রচণ্ড আঘাত পান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত সাদেক খান, শুভ সাহা ও শরিফুল ইসলাম হিমু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজির অনুসারী। এছাড়া সাদেক হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জেরিফ মিশু বলেন, ‘আমাকে সবাই মিলে মারতে গেলে সঙ্গে থাকা আমার বন্ধু ছোলায়মান বাঁচাতে যায়। তারা ছোলায়মানের গায়ে গা হাত দেয় এবং ধাক্কাতে থাকে। আমি বাঁধা দিতে গেলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের মেরে মাটিতে পুঁতে ফেলার হুমকি দেয় এবং বেধড়ক মারধর করতে থাকে। ছোলায়মান আমাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। আমাদের মারতে মারতে গলি থেকে রাস্তায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে আমার বন্ধুকে আরও মারধর করার হুমকি দেয়।’

আরেক ভুক্তভোগী ছোলায়মান খান বলেন, ‘সাদেকসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে টেনে হেঁচড়ে মারধর করে এবং আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমরা প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমাদের ওপর হওয়া এমন নিকৃষ্টতম অত্যাচারের বিচার দাবি করছি। এমন বিধ্বংসী শিক্ষার্থীদের আগ্রাসন থেকে আশ্রয় প্রদান কামনা করছি।’

কথা বলতে অভিযুক্ত সাদেক খান ও শুভ সাহাকে বারবার কল দেওয়া হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে অপর অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম হিমু বলেন, ওই মেয়ের সঙ্গে আমার কোনো বাকবিতণ্ডা হয়নি। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা। আমরা ফটোকপির দোকানে গিয়ে দেখি আমাদের ছোট ভাইদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। আমি গিয়ে জানতে চাইলে তর্ক হয়। ওই মেয়ে জুনিয়র হয়েও আমাদের উপর কয়েকবার জুতা তুলেছে। গরম চা ছুড়ে মারছে। আমার কলার ধরলে সিনিয়র হিসেবে ওই ছেলেকে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে তাদের চলে যেতে বলেছি।বিষয়টি নিয়ে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে প্রক্টর অফিস থেকে আমাকে এখনও কিছু জাননো হয়নি। বিষয়টি কি হয়েছে তা দেখে জানাবো।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবার অভিযোগ দিতে বলেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মেহেদী/মেহেদী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়