ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

অর্থাভাবে বশেমুরবিপ্রবির প্রধান ফটকের নির্মাণ কাজ বন্ধ

হৃদয় সরকার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৩, ৪ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১০:১৬, ৪ নভেম্বর ২০২৩
অর্থাভাবে বশেমুরবিপ্রবির প্রধান ফটকের নির্মাণ কাজ বন্ধ

কারিগরি ত্রুটি, লোকবল সঙ্কট এবং দ্রব্যমূল্যের উদ্ধগতির কারণে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) প্রধান ফটকের নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে কচ্ছপ গতিতে চলছিল। তবে টাকার অভাবে সেটা একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে।

জানা যায়, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প পাশ হয়। ওই বছরই নভেম্বরে প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয় । ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে ১০৫কোটি টাকা বাজেটে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয় ৷ কিন্তু প্রথম মেয়াদে প্রকল্পের অন্তর্গত ১৪টি টেন্ডারের কাজ অসম্পূর্ণ ছিল।

২০১৮ সালে নতুন করে ২৫৬ কোটি টাকায় পূর্বের প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী পাশ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তর এবং প্রকৌশল দপ্তরের মাধ্যমে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করে বাকী অংশের কাজ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান ফটক নির্মাণের জন্য আরডিপিতে ২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ হয়। ঠিকদারী প্রতিষ্ঠান কাজী মাহবুবুর রহমান ২ কোটি ১৪ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফটক নির্মাণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। কিন্তু করোনাসহ বিভিন্ন কারণে ২০২১সালের জুন পর্যন্ত কাজ বন্ধ ছিল বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা। পরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০২২সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

গত ২০২২সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) তুহিন মাহমুদ বলেছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের জুন মাসে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও কারিগরি ত্রুটির কারণে এটি ২০২৩ সালের মার্চে শেষ হবে।’ কিন্তু মেয়াদ শেষ হলেও ফটকের কাজ শতভাগ শেষ হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের এক জরীপে দেখা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান ফটকের কাজের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ এবং এর আর্থিক ব্যয় ছিল ৪৮.৫৩ শতাংশ। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ১৪ লক্ষ ২৯ হাজার টাকার মধ্যে ১ কোটি ৪ লক্ষ টাকা সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে প্রধান ফটকের ঠিকাদার নূর আলী মোল্যা বলেন, কাজ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে চলমান বিলের টাকা দেওয়ার কথা ছিল। আমার কাছে যেটুকু ছিল তা দিয়ে এতদিন কাজ করেছি। কিন্তু আমার কাছে কোনো টাকা নেই এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও টাকা দিচ্ছে না। এজন্য কাজ বন্ধ আছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান সুমন বলেন, প্রজেক্টের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেয়াদ বৃদ্ধি জন্য গত বছর ফেব্রুয়ারিতে আরডিপিপির দ্বিতীয় সংশোধনী জমা দেই। চলতি বছল সেপ্টেম্বরে পরিকল্পনা কমিশনে মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। এটি পাশ হলেই আমরা চাহিদা অনুযায়ি  অর্থ পাব।

মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ শেষ না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, করোনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সমস্যার কারণে কাজ করা সম্ভব হয়নি। বরাদ্দের ২৫৬ কোটি টাকার মধ্যে ১৬৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা হাতে পেয়েছি। আরও প্রায় ৮২ কোটি টাকা বাকি রয়েছে। প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আমরা টাকা পাচ্ছি না। এই টাকাটা হাতে পেলে আশা করি প্রজেক্ট সম্পন্ন করতে পারব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব মুঠোফোন বলেন, প্রধান ফটক নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তর আনতে পারেনি৷ এ কাজে তারা ব্যর্থ হয়েছে। সময়মতো টাকা আনতে না পারায় কাজটি শেষ পর্যায়ে এসে বন্ধ হয়ে গেছে। টাকা আনতে আমি নতুন করে চেষ্টা করছি। আশা করি এক মাসের মধ্যে টাকার ব্যবস্থা হয়ে যাবে এবং ফটকের কাজ সমাপ্ত করতে পারব।

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়