ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চরম বিপাকে শিক্ষার্থীরা

সিয়াম মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫২, ৫ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১২:০৪, ৫ নভেম্বর ২০২৩
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চরম বিপাকে শিক্ষার্থীরা

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস চাল-ডাল থেকে শুরু করে কাঁচাসবজির প্রত্যেকটি পণ্যের দাম যেনো লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে থেমে নেই শীতকালীন শাক-সবজি। এসব পণসামগ্রী কিনতে হয় চড়া দামে। এতে করে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চরম ভোগান্তির শিকার  হচ্ছেন মেসের থাকা শিক্ষার্থীরা। বাড়ি থেকে সামান্য টাকা নিয়ে চলতে প্রতিনিয়িত হিমশিম খাচ্ছেন তারা। রাজধানীর তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের এসব সমস্যা তুলে ধরেছেন রাইজিংবিডির সংবাদদাতা সিয়াম মাহমুদ।

তিতুমীর কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আগে মেসে থাকতে আমার ১০ হাজারের মতো খরচ হতো। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এখন ১৪ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য মেসের মিলরেট ৫০-৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যার প্রভাব আমার পরিবারের উপর পড়েছে। এখন প্রতিমাসে অতিরিক্ত প্রায় চার হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে।

অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাকিবুর রহমান রিফাত বলেন, ২০২৩ এর শুরুর দিকে মাসে পাঁচ হাজার টাকা হলেই মেসের খরচাদি চলতো। কিন্তু গত কয়েক মাসে তা বেড়ে আট হাজারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। চড়া মূল্যের এই বাজারে খরচ কুলাতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমার এবং পরিবারের উপরে একটা আলাদা চাপ সৃষ্টি হয়েছে। চাপ কমাতে আমি সকাল ও বিকেলের নাস্তা করা বাদ দিয়েছি। কিছুদিন আগেও দৈনিক একটি ডিম খাওয়া হতো। কিন্তু এখন সপ্তাহেও এক হালি ডিম খাওয়া হয় না। অন্যদিকে কমেছে মেসের মিলের মান এবং পরিমাণ। সবমিলিয়ে দূর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছে।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আনাস রায় বলেন, আগের তুলনায় এখন দ্বিগুণ টাকা খরচ হয়। আলু থেকে শুরু করে শাকসবজি, মাছ-মাংস সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। আমরা যারা শিক্ষার্থী, তাদের বাইরে থাকা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আমরা বেশিরভাগ পরিবারের উপর নির্ভরশীল। পরিবার থেকে এতো টাকা দিতে পারছে না। আবার পরীক্ষা থাকায় বাড়িও যেতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মেসে খাবারের মান অনেক কমে গেছে। আমরা এখন শুধু বাঁচার জন্য খাচ্ছি। আমাদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য যে পরিমাণ পুষ্টি দরকার তার কোনোটাই আমাদের খাবারে আর থাকছে না। খাবারের দাম কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি।

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. কুরবান আলী বলেন, ২০১৯ থেকে ঢাকায় আছি পড়াশোনার তাগিদে। এই তো কিছুদিন আগেও তিনবেলা খাবার খেতাম বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে। কিন্তু হঠাৎ লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। ইতিমধ্যে সকালের খাবার খাওয়া বাদ দিয়েছি। কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে চলছে আমাদের ছাত্রদের জীবন। সারা দেশেই একই অবস্থা। তাই বাসা থেকে বাড়তি টাকা নেওয়ারও কোন সুযোগ নেই।

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়