ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

৭৪ বছর পূর্তিতে সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

ইয়াসিন মোল্লা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ১১ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৯:২৭, ১১ নভেম্বর ২০২৩
৭৪ বছর পূর্তিতে সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

গৌরবের ৭৪ বছর পেরিয়ে ৭৫ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। এই ৭৪ বছরে তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি কলেজটিতে। মাত্র এক একরের কিছু বেশি জায়গায় স্থাপিত কলেজটির শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় নয় হাজার। কিন্তু এই নয় হাজার শিক্ষার্থী জন্য নেই পর্যাপ্ত ক্লাস রুম, শিক্ষক, লাইব্রেরি। নেই পরিবহন ব্যবস্থা, আবাসন ব্যবস্থা, ক্যান্টিনসহ অনেক কিছু। সবমিলিলে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর অনেক বিড়ম্বনা পড়েন শিক্ষার্থীরা। বিগত বছরগুলোতে নানা অপ্রাপ্তি এবং ভবিষ্যতের প্রত্যাশার কথা রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। 

আমাদের  পাওয়া না পাওয়ার হিসেব অনেক। রাজধানীর অন্যান্য কলেজের সাথে আপনি তুলনা করলে দেখবেন, আমার ক্যাম্পাস কোন দিক থেকে এগিয়ে? কয়েকদিন  আগে  একটি সংস্থার প্রতিবেদনে আমাদের কলেজের অবস্থান ছিল সি-গ্রেড;  যা লজ্জার। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন দরকার। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চাওয়া একটাই একজন শিক্ষার্থী  হিসেবে আমার ক্যাম্পাস থেকে যা পাওয়ার অধিকার, তা যেন আমি পায়। কলেজ প্রশাসনের সেই দিকগুলো খেয়ালে রাখা দরকার।

পাওয়া না পাওয়ার মধ্যেও কলেজকে অসম্ভব ভালোবাসি। পুরান ঢাকার এই লাল ইটের বাতিঘর আমার শেষ আশ্রয়স্থল। আমার আগামীর ভবিষ্যৎ গড়ার কারিগর প্রানের ক্যাম্পাস ‘সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ’।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উত্তরোত্তর সফলতা ও মঙ্গল কামনা করি। সেই সঙ্গে বিনম্র  শ্রদ্ধা  যারা কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছন এবং সেই থেকে এই পর্যন্ত কলেজটির আধুনিকরণ রূপ দেওয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে কাজ করা প্রিয় শিক্ষকদের অবদান  অনস্বীকার্য। তাদের প্রতিও অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা । 
-ফাইজুর রহমান ফায়েল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ষষ্ঠ ব্যাচ।

সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৪৯ সালে। কলেজের শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাদের ছায়ায় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিভা বিকাশের এক অন্যতম মাধ্যম। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পারদর্শী হতে সহায়তা করে। আমি প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছি এবং সম্মানিত অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট হতে পুরস্কার গ্রহণ করেছি। আগামীতে কলেজের হল, বাস, ক্যান্টিনের ব্যবস্থা  করা হবে প্রত্যাশা রাখি। এগুলো খুবই প্রয়োজনীয় এবং কলেজকে আকর্ষণীয় করতে ভূমিকা রাখবে। কলেজের পলেস্তারা খসে পড়ে শিক্ষার্থীরা যেন আহত না হয়, সে কামনা করি। 
-অদিতি শামসী, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ, বাংলা বিভাগ।

আমাদের এই সরকারি শহীদ সোহাওয়ার্দী কলেজ অত্যন্ত সুন্দর। শিক্ষার মনোরম পরিবেশ রয়েছে এখানে। কিন্তু এখানে ভোগান্তি ও আছে। যেমন- বাস না থাকায় যাতায়াতে চরম দূর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়া এ কলেজ আমার দেখা মতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না, আলহামদুলিল্লাহ। অনেক সরকারি কলেজ থেকে এটা ভালো অবস্থানে রয়েছে।
-আতিক হাসান অনিক, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ, মানবিক। 

৭৪ বছর বলতেই শেষ। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন ৭৪ বছরের কত ইতিহাস চাপা পড়ে গেছে? চাপা পড়ে গেছে মাটির তলায় কিছু মানুষের দেহ! কত অধ্যাপক এসেছিলেন। কিন্তু সময়ের ভারে তারা আজ নেই। কত ছাত্র-ছাত্রী এই ক্যাম্পাসে ছিল, একটু পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখুন তারা আজ কোথায়? ৭৪ বছর আগেও এই কলেজের দালানগুলো ছিল, এখনো আছে। নেই শুধু সেই ইতিহাস গড়ে যাওয়া মানুষগুলো। এই ছোট্ট ক্যাম্পাসটা কতই-না স্মৃতি বহন করে। এভাবে পালাক্রমে চলতে থাকবে, নতুন বছর আসবে পুরাতন বছরকে বিদায় জানাতে। এই পুরাতন ঢাকার ইতিহাস গড়া কলেজ থেকে কত ছাত্র -ছাত্রী তাক লাগিয়ে দিচ্ছে সবখানে। ক্যাম্পাসটি ছোট হলেও এই রকম পরিবেশ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এই ছোট ক্যাম্পাসে টিকতেই পারাটা ভাগ্যের বিষয়। এভাবে চলবে প্রতিনিয়ত, প্রতিবছর। ৭৪ বছর চলে গেলো, সেই বছরগুলোকে বিদায় জানাতে নতুন বছর এসে হাজির। সেই নতুন বছর কে স্বাগতম। শুভ হোক নতুন বছর।
-মিনারুল ইসলাম, ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ, দর্শন। 

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়