জাবি প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশের বাধা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণাকে অবৈধ, অগণতান্ত্রিক ও একপাক্ষিক দাবি করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধা বেলা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাত্রা শুরু করে তারা। শুরুতেই পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

এর আগে সকাল ১০টা থেকে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নেয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতাকর্মীরা। তবে খবর পেয়ে পূর্ব থেকেই জাবির প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছিল আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল এবং জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

পরে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় প্রগতিশীল নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে পুলিশ তাদেরকে মিছিল না করতে হুমকি দেয় বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। পরে বিক্ষোভ মিছিল করতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন তারা।

বিক্ষোভ সমাবেশে শাখা ছাত্রফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়ের সঞ্চালনায় ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। আমরা মনে করি, আগামী নির্বাচনও এই সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু হবে না। এই দেশে কোনো স্বৈরাচার সরকার টিকতে পারেনি। আইয়ুব-এরশাদ চলে গেছে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারও একদিন চলে যাবে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশন এই সরকারের আন্ডারে আরেকটা নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে। আমরা এই তফসিলের বিরোধিতা করছি। এই অবৈধ তফসিলের মধ্য দিয়ে এদেশে হাসিনা সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। জনগণ সেটা মানে না। এটি আবারো একটি একদলীয় নির্বাচন ব্যবস্থা হতে যাচ্ছে। সরকার যেভাবে বাকরুদ্ধ করছে, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হচ্ছে, নিপীড়ন করছে তাতে তাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগি সামিয়া বলেন, শিক্ষার্থীরা মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না। গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করে এমন এক স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। গুটিকয়েক মানুষ ভোটের অধিকারের জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। তারা আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে। আজকের ঘটনা থেকে প্রমাণ হয়ে যায় এ বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

সাভার শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি জীবন আহমেদ বলেন, পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে। সামনে অগ্রসর না হতে দিয়ে এখানে থামিয়ে দিয়েছে। জনগণকে আর থামানো যাবে না। গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এটা তার বাঁচার লড়াই, ভোটাধিকার আদায়ের লড়াই।

সাভার-আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিদিনের মতো আজকেও  টহলের অংশ হিসেবে এখানে এসেছি, যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। তবে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাধা প্রদানের কারণ জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।