ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২১ ১৪৩১

ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে স্বাস্থ্যসম্মত ওয়াশরুম চাই

হাবিবুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ১৭ নভেম্বর ২০২৩  
ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে স্বাস্থ্যসম্মত ওয়াশরুম চাই

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এর কেন্দ্রীয় গ্রস্থাগারের সূচনা। ঢাকা কলেজ ও ল’ কলেজ থেকে প্রাপ্ত প্রায় আঠারো হাজার বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে যাত্রা শুরু করে এ গ্রস্থাগার।

ঢাবিভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো কেন্দ্রীয় গ্রস্থাগারও সমস্যা মুক্ত নয়। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই এর আসন স্বল্পতা রয়েছে। শুরুতে আসন সংখ্যা ছিলো ৫৮০টির মতো। পরবর্তীতে এক্সটেনশন বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে আসন সংখ্যা প্রায় ১৫০০ করা হয়, যা বর্তমানেও চলমান। যা শিক্ষার্থীদের তুলনায় এ সংখ্যা খুবই নগণ্য।

শুধু যে আসন সমস্যা, তা কিন্তু নয়। কেন্দ্রীয় গ্রস্থাগারে এমন শত শত সমস্যা ভর করে আছে, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন এগুলোর মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আসন সংকট ছাড়াও সাইকেল-বই চুরি, সিসিটিভির অপর্যাপ্ততা, ব্যবহার অনুপযুক্ত ওয়াশরুম, সুপেয় পানির অভাব, বহিরাগত শিক্ষার্থীদের অনুপ্রবেশ, মেট্রোরেল ও যানবাহনের সৃষ্ট শব্দদূষণ, নেটওয়ার্কিং সমস্যা, ইন্টারনেট সেবা না থাকাসহ নানা অব্যবস্থাপনা দেখা যায়।

শত সমস্যার মধ্যে টয়লেট-ওয়াশরুমের সমস্যাটা সবার প্রথমে দৃষ্টিগোচর হয়। কারণ লাইব্রেরিতে ঢুকতেই প্রথম তলায় টয়লেটের দুর্গন্ধ নাকে লাগে। কাদা-পানি মাখা স্যাঁতসেঁতে অবস্থার চিহ্ন প্রধান দরজা থেকে বাথরুম পর্যন্ত আঁকা। দেখে মনে হয়, কোনো বিখ্যাত গণিতবিদ বড় কোনো জ্যামিতিক সমাধানের জন্য বিরাট এক সরল রেখা এঁকে  রেখেছে। কখনো কখনো টয়লেট থেকে আসা দুর্গন্ধ অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। টয়লেটের সিলিন্ডারসহ চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ব্যবহৃত টিস্যু পেপার। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ওয়াশরুমগুলোর অবস্থাও একই রকম।

প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াশরুমের সংখ্যা মাত্র ১৮টি। আর মেয়েদের জন্য মোটে চারটি। ফলে প্রায়ই ওয়াশরুমে যেতে প্রয়োজন হয় দীর্ঘ সিরিয়ালের।

গত ১৫ই নভেম্বর সাধারণ শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারের এসব সমস্যা নিয়ে জোর আন্দোলন করে। তাদের দাবি ছিলো- আসন সমস্যা নিরসনসহ পর্যাপ্ত টয়লেট বৃদ্ধি করা এবং এর স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ  বজায় রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
এ ব্যাপারে প্রধান লাইব্রেরিয়ান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, এ সমস্যা ইদানিং বেড়ে গেছে। মূলত জায়গা সংকুলানের কারণে এ সমস্যা প্রকট হয়েছে। টয়লেটের সংস্কার কার্যক্রমের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। খুব শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হবে।

পড়াশোনার জন্য চাই সুস্থ, সুন্দর, অনুকূল পরিবেশ। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের এসব অব্যবস্থাপনা খুব শীঘ্রই নিরসনের জোর দাবি জানাই। মেয়েদের ওয়াশরুম বৃদ্ধিসহ শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা জরুরি। সেকেলে ব্যবস্থার পরিবর্তে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় এসব সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার কেন্দ্রস্থল এই গ্রন্থাগারকে পড়াশোনার উপযোগী এবং শিক্ষার্থীবান্ধব করা হোক।

-লেখক: শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়