‘আমি আত্মহত্যা করলে দায়ী থাকবে বশেমুরবিপ্রবি প্রশাসন’
বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
আমি আত্মহত্যা করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী থাকবে। আমি মারা গেলে আমার লাশ বাবা-ময়ের কাছে বাড়ীতে যেন পাঠিয়ে দেয়া হয়। সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি এমন অনুরোধ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল চত্ত্বরে মারধর, জীবননাশের হুমকী ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই শিক্ষার্থী।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গত ৬ নভেম্বর রাতে রনি মৃধার নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবক শেখ রাসেল হলের ৩০৩ নম্বর কক্ষে গিয়ে আমাকে মারধর করে। পরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আসলে সুষ্ঠ বিচারের আশ্বাস দেয় প্রশাসন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে ১২ নভেম্বর মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু ১১ নভেম্বর আবারো হলে গিয়ে দুপুরে রনি ও তার লোকজন তদন্ত কমিটির কাছে সত্য না বলার জন্য আমাকে হুমকী দেয়।
তিনি বলেন, এতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওই দিনই আমরণ অনশনে বসি আমি। কিন্তু আবারো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিচারের আশ্বাস দিলে অনশন ভেঙ্গে হলে ফিরে যাই। কিন্তু সাত কর্মদিবস পেরিয়ে গেলেও এখন সুষ্ঠু বিচার পায়নি। এতে আমি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ আরো বলেন, এখন আমি পক্ষাঘাতসহ মানসিক অবস্থা নিয়ে জীবন যাপন করছি। আমি যদি আত্নহত্যা করি, এর দ্বায়ভার সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃর্পক্ষের। বিগত ১১ দিন আমি ঠিকভাবে ঘুমাতে পারছি না। সব সময় হতাশা ও ভয়ে থাকতে হয়। কারন যারা আমাকে বেধড়ক মারপিট করলো, তারা ক্যাম্পাসে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আমার মনে হয় আমি সঠিক বিচার পাবো না। যে কোনো সময় তারা আমাকে মেরে ফেলবে। আমি যদি কখনো আত্মহত্যা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ আমার লাশ যেন বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছে দেয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলন করেছে এবং আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে সেটা আমরা জানা নেই। মো. সাজ্জাদ হোসেনের বিষয় নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ তদন্ত কমিটি কাজ করছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করতে একটু সময় লাগে। দুই-এক দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দিবেন।
প্রসঙ্গত, গত ৫ নভেম্বর ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগ ও ফার্মেসি বিভাগের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দুই বিভাগের খেলোয়াড়দের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক এবং এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই রাতে ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রনি মৃধা তার ১০-১২ জন সহযোগীদের নিয়ে শেখ রাসেল হলে গিয়ে ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন ও মো. জাহিদ হোসেনকে কক্ষ থেকে বের করে নিয়ে এসে মারপিট করে।
/হৃদয়/মেহেদী/