ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

ক্যান্সারে আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে চায় বাবা হারা রাবি শিক্ষার্থী

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৯, ২৭ নভেম্বর ২০২৩  
ক্যান্সারে আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে চায় বাবা হারা রাবি শিক্ষার্থী

পৃথিবীতে শুদ্ধতম সম্পর্কের নাম মা। মমতাময়ী যে মা অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখিয়েছেন। দেখিয়েছেন সুজলা-সুফলা সৌন্দর্যে ভরা এই পৃথিবী। যেই মা বুঝাতে শিখিয়েছেন এই জীবনের অর্থ কি! সেই মা আজ মরণব্যাধি রোগে আক্রান্ত।

হেপাটোসেলুলার কার্সিনমা নামক লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী বিষ্ণু সরকার । তার মা নমিতা রানি সরকার।

বিষ্ণুর বাসা পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামে। মা ও এক ভাইকে নিয়ে তার পরিবার। তার বাবা জুরান চন্দ্র সরকার মারা যান ২০১৭ সালে। তার ভাই কৃষ্ণ সরকার স্বল্প বেতনে চাকরি করেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিষ্ণুর মায়ের দ্রুত উন্নত চিকিৎসা করতে হবে। চিকিৎসা  করতে প্রায় আট লাখ টাকা খরচ হবে। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে এই চিকিৎসার ব্যয় বহন করা অসম্ভব। তাই দেশের মানুষের কাছে সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছেন অসহায় বিষ্ণুর পরিবার।

বিষ্ণু সরকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার মা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ২০২০ সালে পটুয়াখালিতে চিকিৎসার সময় ফ্যাটি লিভার ধরা পড়ে। ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী ওষুধ চলছিল। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের জুলাই মাসের শুরুতে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকাতে নিয়ে আসা হয় । বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পোর্টাল ভেইন থ্রম্বোসিস ধরা পড়ে। ডাক্তার কিছু ওষুধ দিয়ে দুই মাস পরে আবার চেকআপের জন্য আসতে বলেন।

তিনি জানান, অক্টোবর মাসে আবার অসুস্থ হলে ঢাকায় নিয়ে এসে ডাক্তারের নির্দেশনায় অনেকগুলো পরীক্ষা করা হয়। চলতি নভেম্বর মাসে লিভার টেস্ট করে হেপাটোসেলুলার কার্সিনমা নামক ক্যান্সার ধরা পড়ে।

বিষ্ণু আরও বলেন, ২০১৭ সালে আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি। বাবাকে হারানোর পর এই পৃথিবীতে আমার মা-ই সব। কিন্তু সেই মাও আজ মরণব্যাধি রোগে আক্রান্ত। জানি না, সৃষ্টিকর্তা আমার উপর এ কেমন পরিক্ষা নিচ্ছেন! মাকে চিকিৎসার জন্য আমার বাবার রেখে যাওয়া সবটুকু দিয়েই চেষ্টা করছি। লিভারের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাহিরে নিতে হবে। চিকিৎসার জন্যে খরচ হবে আনুমানিক ৮ লাখ টাকার মতো।

এদিকে চিকিৎসা ব্যয় সীমার বাইরে চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অসহায় এই পরিবার। মাকে বাঁচাতে তাই সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন সন্তানেরা। এখন পর্যন্ত আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকার তারা ম্যানেজ করতে পেরেছেন। চিকিৎসা সম্পন্ন করতে প্রায় আট লক্ষ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু তার পরিবারের পক্ষে এই চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। তাই তাদের মায়ের চিকিৎসার জন্য সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন । যে যা পারেন তা দিয়েই সাহায্য করলে বাবা হারা বিষ্ণু হয়তো ফিরে পাবেন তার মাকে।

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক ড. মো. আতাউর রহমান রাজু বলেন, পৃথিবীতে শুদ্ধতম সম্পর্কের নাম মা। ছেলেটা ২০১৭ সালে ওর বাবাকে হারিয়েছে। বর্তমানে এই পৃথিবীতে আপন বলতে একমাত্র ওর মা ই আছে। ওর মা না হয়ে যদি ভাইও হতো তাহলে আমার এতটা খারাপ লাগতো না। বিষ্ণুর মায়ের জন্য আমি নিজে যতটুকু সম্ভব সাহায্য করেছি। আমার বন্ধুদেরকেও সাহায্য করার জন্য বলেছি। ছাত্রদের বলেছি, প্রতি বিভাগে গিয়ে যতটুকু সম্ভব কালেকশন করতে। নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিষ্ণুর জন্য অনেক কষ্ট করছে।

সাহায্য পাঠানো ঠিকানা: বিষ্ণু সরকার, ০১৫৩৩৭৬৬০৬৭ (বিকাশ, নগদ, রকেট)। কৃষ্ণ সরকার, একাউন্ট নাম্বার- ২৬৬-১৫৮-২৩৪৭, ডাচ বাংলা ব্যাংক, গোপালগঞ্জ ব্রাঞ্চ।

/বিজয়/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়