রাবিতে সিট থেকে শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দিলো ছাত্রলীগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলে সিট পাওয়ার একদিন পরেই এক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর হল প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পুনরায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ওই সিটে তুলে দেন। গতকাল শুক্রবার (১ ডিসেম্বর)  রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ১৪৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আবির হোসাইন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'ওই হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ফজলে রাব্বি ও কয়েকজন নেতাকর্মী তার বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়েছিল।'

অভিযুক্ত রাব্বি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ এবং ওই হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু তার পক্ষ থেকে রাব্বীকে ওই হল দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হল প্রশাসনের মাধ্যমে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ১৪৪ নম্বর কক্ষে ওঠেন আবাসিক শিক্ষার্থী আবীর হোসাইন। গতকাল শুক্রবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি (আবির) কক্ষের বাইরে ছিলেন। এ সময় ওই হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ফজলে রাব্বি ও তার দুজন অনুসারী আবিরের বিছানাপত্র সিট থেকে নামিয়ে দেয়। ওই আসনে রাব্বির অনুসারী ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সিয়ামকে তুলে দেন। সন্ধ্যা ৬টার পর হলে এসে তাৎক্ষণিক বিষয়টি হল প্রশাসনকে জানায় আবির।

পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হলে আসেন হল প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন, আবাসিক শিক্ষক তানজিল ভূঁইয়া, অনুপম হীরা মণ্ডল, ফারুক হোসেন ও মামুনুর রশিদ। তারা ছাত্রলীগ নেতা ফজলে রাব্বির কাছে বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চান। কিন্তু তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে রাত ১১টার দিকে হল প্রশাসন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবিরকে ওই আসনেই তুলে দেন।

গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে আবির হোসাইন আসন ফিরে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাব্বি ও কয়েকজন নেতাকর্মী আসন থেকে তার বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়েছিল। ওই আসনে তাদের এক জুনিয়রকে তুলেছিলো। পরে হল প্রশাসনকে বিষয়টি জানালে আমাকে ওই আসনেই তুলে দেন।

তবে বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত ফজলে রাব্বি বলেন, ওই আসনটি তাদের ছিলো। কিন্তু হল প্রশাসন ওই আসনে আবিরকে তুলে দিয়েছেন। আবিরের আবাসিকতা আছে কি-না নিশ্চিত হওয়ার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। আসন থেকে বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, 'একটু আগেই বিষয়টি শুনলাম। প্রাধ্যক্ষ স্যার বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন।'

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী আবির হোসাইন তার বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছিলেন। আবাসিকতা থাকায় আসনটি রাতেই তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।