ববি শিক্ষার্থীর বোনকে হত্যা: বিচার দাবিতে মানববন্ধন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্মাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মো. স্বাধীন হোসেন। তার ছোটবোনের নাম রিফাত জাহান চাঁদনী। স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা চাঁদনীকে নির্যাতন করে হত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

যৌতুক ও বীমার টাকার লোভে হত্যা করা হয় প্রাথমিক ধারণা নিহতের পরিবারের। শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে বিদ্যুতাহত করে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগে জানা গেছে।

নির্যাতন করে হত্যার বিচার চেয়ে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা ১টার দিকে বিচার চেয়ে ববির প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এসময় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শুনেছি তাকে (চাঁদনীকে) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন বীমার টাকার লোভে তাকে হত্যা করে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব সারোয়ার বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শক দিয়ে এমন নৃশংস হত্যার বিচার চেয়ে আমরা প্রতিবাদ করছি। তার বোনের মুখে,পায়ের তলায় বড় দাগ রয়েছে। যেটা নিশ্চিত হওয়া গেছে, তারা নির্যাতন করে হত্যা করেছে।’

হত্যার শিকার চাঁদনীর বড় ভাই স্বাধীন হাসান বলেন, ‘গত ১০ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে হত্যা করে তার স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন। পরদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমাদেরকে জানানো হয়। আমরা গিয়ে দেখি একেবারে বিবস্ত্র অবস্থায় শরীরের অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন নিয়ে পড়ে আছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তাকে (চাঁদনীকে) যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেওয়া হতো এবং প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন করতো তার স্বামী। শেষ সময়ে চাঁদনীকে ভুল বুঝিয়ে সোনালী লাইফ ইনসুরেন্স থেকে গত ২৮ নভেম্বরে ২০ লক্ষ টাকার একটা হিসাব খোলা হয়। যাতে নমিনি করে তার স্বামী মশিয়ারকে। মাত্র একটা প্রিমিয়াম জমা দেয়। পুনরায় ১৫ লক্ষ টাকার আরেকটি হিসাব খুলতে চায়। যাতে চাঁদনীকে হত্যা করে টাকা নিজের নামে নিতে পারে। সেজন্য তাকে বার বার নির্যাতন করা হতো।’ যৌতুকের টাকা ও ইনসুরেন্সের টাকা পাওয়ার আশায় তাকে হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

চাঁদনীর পরিবার থেকে জানানো হয়, এ বিষয়ে মহেশপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- চাঁদনীর স্বামী মশিয়ার রহমান, ননদ কাকলি খাতুন, জলি খাতুন, শাশুড়ি ফনি বেগম, শ্বশুর আশরাফ আলীসহ অজ্ঞাতনামা। আসামীদের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার মহেশপুর উপজেলার গুড়দহ গ্রামে। হত্যার শিকার চাঁদনীর বাড়ি একই জেলায় বলে জানা গেছে।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শামীম আহসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হাসান, নেওয়াজ, বন্ধন মণ্ডল, মো. জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।