শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচিহ্নে অলংকৃত চবির কলা অনুষদ
আকিজ মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম
![শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচিহ্নে অলংকৃত চবির কলা অনুষদ শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচিহ্নে অলংকৃত চবির কলা অনুষদ](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2023December/CU-Art-faculty-1-2312200812.jpg)
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কলা অনুষদভুক্ত বিষয়সমূহ পাঠদানে নির্মিত হয় ড. আবদুল করিম ভবন। ভবনটি বহন করছে শত সহস্র শিক্ষার্থীর স্মৃতিচিহ্ন। অবয়ব জুড়ে পুরনো রেখার নিস্তব্ধতা। যেন তা ভাবায় নতুন করে, নতুন সুরে। শ্যাওলা মাখা দেওয়ালে কোথাও আলপনা কোথাও রথী-মহারথীদের প্রতিষ্ঠিত বাণী, মনে হতে পারে, এ যেন এক কথামালায় সজ্জিত রঙধনুর জাদুঘর।
এই অনুষদের প্রতিটি দেয়াল যেন শিক্ষার্থীদের আবেগ স্তম্ভে গড়া। ব্যর্থ প্রেমিক প্রিয়জনকে তুলে রেখেছে ইট পাথরের ওপরে স্মৃতিচিহ্নের শক্ত কাঠগড়ায়। ঠিক বাংলা সিনেমার ব্যর্থ প্রেমিকের শেষ উপায়ন্তর দৃশ্যপটের মতো।
'তাকে ভালবাসার পর আর ওকে মনে ধরলো না', 'কেনো রোদের মতো হাসলে', 'ধর্ষিতাকে বলে দিও সে আমার চোখে পবিত্র নারী'- এরূপ শত লিখনে কলা অনুষদের ভবনটি হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্য আর গাম্ভীর্যের ধারক।
কেবল বিয়োগান্ত অনুভূতির শব্দমালা নয়, সফলতার অনেক দ্যুতিময় বাণীও জ্বলজ্বল করছে ভবনটির দেয়াল জুড়ে।
প্রথম থেকে চতুর্থ তলার ব্যালকনি সেজেছে শিক্ষার্থীদের আবেগের রঙে। বছর জুড়ে একদল শিক্ষার্থী এখানে আসে, স্মৃতি জমায়, এক সমুদ্রের স্মৃতি নিয়ে নতুন জীবনে স্থলাভিষিক্ত হয়। সঙ্গে শব্দ সজ্জায় অলংকৃত হয় সুউচ্চ কলা ভবনটি।
ভবনটির নিচ থেকে চতুর্থ তলা অব্দী যদি কেউ পথিক বেশেও পরিভ্রমণ করে, তবু অত্যুক্তি আসার সুযোগ নেই। এক মস্ত পৃথিবী যেন চারদিকে লিখনী হয়ে আকৃষ্ট করে। নানা আলপনায় মনে জমে থাকা দুঃখকে মনে করিয়েও ভালো থাকার বার্তা দেয়।
'যার যে বোঝা বইবার ক্ষমতা নেই, ঈশ্বর তার কাঁধেই কত কি চাপিয়ে দেন'- লিখনটি দেখতেই আপনার চোখে আরেকটি লেখা ভেসে উঠবে, 'এই পৃথিবী কাপুরষদের জন্য তৈরি হয়নি'।
পৃথিবী হয়তো সাহসীদের জন্যই। সেই সাহসের বাণী ধারণ করে তৃতীয় তলায় একটু পায়চারি করতেই চোখে মিলবে স্বাধীনতার কথা, যদিও তা বৃত্তের বাইরে। 'বৃত্তের বাইরে স্বাধীনতা', 'Freedom of speech is our basic right'- এরূপ শত কথামালায় সজ্জিত কলা ভবনের দেয়াল যেন ক্লাসরুম অব্দী পৌঁছে দেওয়ার প্রদর্শনী বই।
এই অনুষদের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারহানা আজিজ বলেন, 'হাঁটা চলার সময় যখনই দেয়াল লিখন চোখে পড়ে, তার কিছু কিছুতে অজান্তেই অতীতে চলে যাই। আর কিছুতে বর্তমানকে দেখতে পাই। এমনও কিছু আছে যেখানে ভবিষ্যতের চিন্তা খেলা করে। এ যেন শিক্ষার এক আকর্ষণীয় রঙিন রূপ!'
আরো পড়ুন