ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

রাবির মসজিদে আড়াই হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারে

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৫, ১৬ জানুয়ারি ২০২৪  
রাবির মসজিদে আড়াই হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রধান ফটক পেরোতেই জোহা চত্বর, সেখানেই প্রশাসনিক ভবন। জোহা চত্বর থেকে ডান দিকে ঘুরে এগিয়ে গেলেতেই চোখে পড়বে অগ্রণী ব্যাংক ও রাবির দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবন। এরপরই মুসলিম স্থাপত্যের আদলে নির্মাণ করা সুউচ্চ মিনার বিশিষ্ঠ মসজিদ।

মসজিদের সৌন্দর্য বাড়াতে চতুর্দিকে স্থাপন করা হয়েছে ল্যাম্পপোস্ট। নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনাও। সব থেকে আকর্ষণীয় দিক হলো, সুবিশাল এই মসজিদের অভ্যন্তরে নেই কোনো পিলার। মূল কাঠামোর মধ্যবর্তী স্থানে ওপরের দিকে নির্মাণ করা হয়েছে বিশালাকার গম্বুজ।

এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। অসাধারণ নির্মাণশৈলী ও নান্দনিকতায় রাজশাহীতে অনন্য এই মসজিদ। যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য্যকে বাড়িয়ে সূচনা করেছে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭০ সালের ১৩ এপ্রিল প্রায় তিন একর জায়গায় এই মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর মূল কাঠামোর দৈর্ঘ্য ৫২ গজ ও প্রস্থ ৫২ গজ। তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের নকশাপ্রণেতা ‘থারিয়ানির’ নকশার আলোকে এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৭৪ সালের মার্চ মাসে। রাবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটির নির্মাণ ব্যয় তৎকালীন ৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই কাজ শেষ করতে ব্যয় হয়েছিল প্রায় আট লাখ টাকা।

মসজিদের বারান্দা ও বারান্দার বাইরের যে অংশ রয়েছে, তা মূল কাঠামোর প্রায় দ্বিগুণ। মূল ভবনের অভ্যন্তরে প্রায় ৫০০ মুসল্লির ধারণক্ষমতা রয়েছে। তবে বাইরের ফাঁকা জায়গাসহ এই মসজিদে প্রায় আড়াই হাজার মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদের আঙিনাকে মূল ক্যাম্পাস থেকে পৃথক ও পবিত্রতা রক্ষার্থে চারপাশে আছে দেয়াল। আঙিনা জুড়ে রয়েছে সারিবদ্ধ ঝাউ গাছ। দক্ষিণ-পূর্ব পাশে ফোয়ারা, অজুখানা, অফিসরুম, শৌচাগার ও ইমামের জন্য থাকার ব্যবস্থা। এছাড়া রয়েছে হরেক রকমের ফলের গাছ ও ঈদগাহ।

শ্বেত-শুভ্র ঝাড়বাতিগুলো এতই মনোরম যে নির্মাণের প্রতিটি স্তরের সঙ্গেই তা একবারে মিশে গেছে। মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা ইমাম ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মাওলানা জামাল উদ্দিন। মসজিদের একজন সিনিয়র পেশ ইমাম ও একজন মুয়াজ্জিন আছেন।

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের তত্ত্বাবধানের জন্য দুজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও একজন সেকশন অফিসার রয়েছেন। মসজিদের অজুখানার পাশেই রয়েছে সমৃদ্ধ পাঠাগার। পাঠাগারটি মুসল্লিদের জন্য আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত খোলা থাকে।

তবে ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদের বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে বলে জানান মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা। তারা জানান, মসজিদের পাশেই রয়েছে শহীদ মিনার ও মুক্তমঞ্চ। আসর ও মাগরিবের প্রায় সময়ই এই মঞ্চে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করা হয়। যার কারণে নামাজরত মুসল্লিরা অসুবিধায় পড়েন। নামাজের সময় যেন এসব অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয় সেই দাবি জানিয়েছেন মসজিদের মুসল্লিগণ।

একই সাথে মসজিদ পাঠাগারটিকে আরও সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। বইয়ের সংখ্যা বাড়িয়ে অধ্যয়নের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও যুগোপযোগী করার দাবি মসজিদের ইমামের।

এ দিকে মসজিদের পাঠাগারটি আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত খোলা থাকলেও জোহরের নামাজ থেকে এশার নামাজের আগ পর্যন্ত খোলা রাখার দাবি মুসল্লিদের।

/ফাহিম/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়