ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

গণপরিবহন: নারী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও প্রতিকার

তারানা তানজিনা মিতু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১৬ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ২১:২৫, ১৬ জানুয়ারি ২০২৪
গণপরিবহন: নারী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও প্রতিকার

গণপরিবহনে চালক, সহকারী ও অন্যান্য পুরুষ সহযাত্রীদের দ্বারা অসদাচরণ, কটূক্তি ও যৌন হয়রানির বিষয়ে নারীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন। কখনো উঠে আসে ভয়ানক পাশবিক নির্যাতনের খবরও। অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ আর বাজে ভাষায় নারীদের আক্রমণ তো নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। নারীদের সংরক্ষিত সিট সংখ্যা মোট সিটের ২৫ শতাংশের কম। ফলে গণপরিবহনে নারীদের সঙ্গে চরম বৈষম্য প্রতীয়মান হচ্ছে।

গণপরিবহনে নিয়মিত চলাচল করেন চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এমন কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তির কথা শুনে অনুলিখন করেছেন তারানা তানজিনা মিতু।

নারীর সঙ্গে বাজে কিছু হলে কেউ এগিয়ে আসে না

যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে, সে হারে বাড়ছে না গণপরিবহন। নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে গণপরিবহন ব্যবহার করতে হয়। ফলে অব্যাহত রয়েছে ভোগান্তিও। যত দিন যাচ্ছে পরিবহনে নারীদের অস্বস্তি বেড়ে যাচ্ছে। সহযাত্রীদের সঙ্গে ঠেলাঠেলি করে বাসে উঠা, গায়ের সঙ্গে ধাক্কা লাগা, হেলপাররা ওঠার সময় পিঠে হাত দেওয়ার চেষ্টা করা, বাস ভর্তি মানুষ থাকলেও দাঁড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়।

ক্লাস শেষ করে বাস পাওয়া খুব ঝামেলা। বাসে যাওয়ার সময় কোনো নারীর সঙ্গে বাজে কিছু হলে আশেপাশের যাত্রীরা হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। সেভাবে কেউ এগিয়ে আসে না তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করার জন্য। আশা করছি সাধারণ নারী যাত্রীদের কল্যাণে এবং এই ভোগান্তি লাঘব করতে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

(লেখক: ফারিয়া আফরোজ, চতুর্থ বর্ষ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ।)

নারী জন্য সংরক্ষিত আসন বাড়ানো হোক

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশানুযায়ী নারীদের জন্য বরাদ্দ কেবল ৯টি আসন, যা চাহিদার তুলনায় অনেকটাই অপ্রতুল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই অল্প সংখ্যক আসনও অনেকাংশে দখল করে নেন পুরুষরা। এছাড়া নারীদের আসনে বিভিন্ন মালামাল উঠানোর ফলে সংরক্ষিত মহিলা আসনের উপযোগিতা নষ্ট হয়। নারীদের সিটে পুরুষ বসে আছেন আর নারীরা সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছেন- এ বিষয়টি এখন প্রতিটি বাসে খুবই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে অধিকাংশ বাসচালক বা হেলপারের ভূমিকা থাকে নারী বিরোধী। ফলে অধিকাংশ নারী চুপ থাকাটাকেই পছন্দ করেন। নারী যাত্রীদের সংরক্ষিত আসন বাড়ানো হোক অথবা আলাদা বাস চালু করা হোক। এছাড়া নারী যাত্রীদের যাত্রাপথে ভোগান্তি কমবে না।

(লেখক: ঈশা কামাল, চতুর্থ বর্ষ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ।)

সমাজের সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন

দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য আমাকে গণপরিবহন ব্যবহার করতে হয়। গণপরিবহনে নারীদের আসন সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় কম। তারপরও নারীদের জন্য নির্ধারিত আসনে বসে অনেক সময় পুরুষরা যাতায়াত করেন এবং প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন কটু কথা শুনতে হয়। আর এসব অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে কোনো বাসযাত্রী নারীর পক্ষে কখনো কথা বলে না। তাই কেউ কথা না বললেও নারীকে নিজের জন্য সবসময় লড়াই করে যেতে হবে। মূলত আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে থাকে। এ ধরনের অপরাধের জন্য কর্তৃপক্ষের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। এখন সময় এসেছে সমাজের সমৃদ্ধির জন্য আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করার।

(লেখক: শক্তি দে, চতুর্থ বর্ষ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ।)

নারী-পুরুষের আসন আলাদা করা উচিত

গণপরিবহনে নারী শিক্ষার্থীদের অনেক ধরনের ভোগান্তি হয়ে থাকে। অনেক সময় নারী শিক্ষার্থীদের জন্য গাড়ির পরিবেশটাই নিরাপদ থাকে না। যৌন হয়রানি, বাজে অঙ্গিভঙ্গি এসবের কারণে খুবই অস্বস্তিতে পড়েতে হয়। নারীদের যাতায়াতের এসব ভোগান্তি কমাতে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এর সঙ্গে, নারী-পুরুষের আসন আলাদা করা উচিত। এতে করে নারীদের হয়রানি কমে আসবে।

(লেখক: মাইমুনাতুল নুসরাত, চতুর্থ বর্ষ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ।)

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়