অনলাইন ক্লাস বর্জনের ঘোষণা জাবি শিক্ষার্থীদের
জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
![অনলাইন ক্লাস বর্জনের ঘোষণা জাবি শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস বর্জনের ঘোষণা জাবি শিক্ষার্থীদের](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024January/Jahangirnagar-University-2401171407.jpg)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (৫২তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে আসন বরাদ্দসহ সশরীরে ক্লাস শুরুর দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাস বর্জন করেছে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) ৫২তম ব্যাচের কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেসবুকে তাদের ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘জেইউ ব্যাচ ৫২- অফিশিয়াল গ্রুপ’ নামে একটি প্রাইভেট গ্রুপ রয়েছে। সেখানে প্রতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে শ্রেণি প্রতিনিধিরা (সিআর) পোস্টের মাধ্যমে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে, গত সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সশরীরে ক্লাস শুরুসহ তিন দফা দাবিতে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন নবীন শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সব অনুষদ ও বিভাগীয় প্রধানদের বেনামি ই-মেইলের মাধ্যমে সশরীরে ক্লাস শুরু ও অনলাইন ক্লাস বর্জন করার কথা জানান তারা। দাবি পূরণ না হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার থেকেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করতে শুরু করে। সর্বশেষ আজ বুধবার অন্তত ২২টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস বর্জন করে।
ক্লাস বর্জনকারী বিভাগগুলো হলো- অর্থনীতি, সরকার ও রাজনীতি, আইন ও বিচার, নৃবিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ভূগোল ও পরিবেশ, পরিবেশ বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন, বাংলা, ইংরেজি, চারুকলা, দর্শন, প্রত্নতত্ত্ব, গণিত, রসায়ন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রাণিবিদ্যা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ এবং ফার্মেসী বিভাগ।
এছাড়া ইন্সটিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি- জেইউ) এবং তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জনের ডাকে সাড়া দিয়েছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসেন জাকির রাইজিংবিডি'কে বলেন, দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস শুরু হয়ে সেমিস্টার ফাইনাল পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জাবি দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্বেও আমরা ৫২তম আবর্তন এখনো সশরীরে ক্লাসে যেতে পারিনি। এটা খুবই দুঃখজনক। ৫২’র হল নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ প্রশাসন। তার মধ্যে ৫৩তম আবর্তনের ভর্তি পরীক্ষার সময় দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য মেনে নেওয়া কষ্টকর।
জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নূহু আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, আমি মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, আমাদের জীববিজ্ঞান অনুষদের ফার্মেসী ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছে। তবে অনুষদভুক্ত অন্যান্য বিভাগগুলোতে ক্লাস হচ্ছে। নবীন শিক্ষার্থীদের যেন গণরুমে কষ্ট করে থাকতে না হয়, এজন্য নতুন হলগুলো সম্পূর্ণরূপে চালু হওয়া অবধি অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে নতুন হলগুলো এখনও শিক্ষার্থীদের ওঠানোর জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত না হওয়ায় বাধ্য হয়েই আমাদের অনলাইনে ক্লাস নিতে হচ্ছে। তবে এ সমস্যার দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে উপাচার্য স্যার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, এ ব্যাপারে আমি শুনেছি। নতুন হলগুলোতে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আপাতত ছেলেদের একটি হল ও মেয়েদের একটি হল খুলে দেওয়া হবে। আমরা নবীন শিক্ষার্থীদের দুটি হলে সিট অ্যালোট দিয়ে চলতি মাসের শেষ দিকে তাদের অফলাইনে ক্লাস শুরু করবো।
প্রসঙ্গত, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গত বছরের ৩০ নভেম্বর। তবে হলে নবীন শিক্ষার্থীদের আসন বরাদ্দ না দিয়ে এবং সশরীরে ক্লাস শুরু না করেই আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী ব্যাচের (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষা শুরু করার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
/আহসান/মেহেদী/
আরো পড়ুন