ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৯ ১৪৩১

বাংলা একাডেমির জন্য সিভি চেয়েছিল, না বলেছি: ড. সৌমিত্র শেখর 

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৩, ২৩ জানুয়ারি ২০২৪  
বাংলা একাডেমির জন্য সিভি চেয়েছিল, না বলেছি: ড. সৌমিত্র শেখর 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর ভারতের কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এছাড়াও তিনি ‘দীনেশ-রবীন্দ্রপত্র’ এবং ‘ঋষিজ’ পদকে ভূষিত হওয়ায় তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

শুরুতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের উপস্থিতিতে কেক কাটার মাধ্যমে পাঁচ বৎসর পূর্তি উদ্যাপন করা হয়। এরপর বিভাগের সদ্য যোগদান করা নবীন শিক্ষকদের বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা।

পদকপ্রপ্তি উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করায় উপাচার্য সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই যে দীনেশ-রবীন্দ্রপত্র বা ঋষিজ পদক যা-ই বুলেন না কেনো, কোনদিন কোনো পদকের জন্য বলিনি। এবার বাংলা একাডেমির জন্য সিভি চেয়েছিল। আমি বলেছি, না। সিভি দিতে পারবো না। পদকের জন্য তদবির করা আমার জীবনে নেই। বাংলা একাডেমি পদক যদি না পাই, তাহলে কী এমন হবে; কিছুই না। এর জন্য তদবির করতে পারবো না। আমার কাজ হচ্ছে গবেষণা করা। আমি সেটাই করে যাবো। তাই ছাত্রছাত্রীদের বলবো যে, তুমি তোমার বিদ্যায় শতভাগ উত্তীর্ণ হও। আমাদের মাস্টার হতে হবে। এই মাস্টার হচ্ছে দক্ষতা।

তিনি বলেন, এই যুগের সবচাইতে বড় সংকট হচ্ছে দক্ষ মানুষ। আমাদের প্রচুর মানুষ আছে, কিন্তু দক্ষ মানুষ নেই। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘আমি জনতা দেখি, মানুষ দেখি না।’ জনতা ও মানুষের মধ্যে যে পার্থক্য আছে, সেটি এই কথাটিতেই স্পষ্ট। ওই রকম জনতা হওয়ার কোনো দরকার নেই। আমাদের মানুষ হতে হবে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সমাজবিজ্ঞান থেকে পরবর্তীতে বহু বিভাগের জন্ম হয়েছে। বহু বিদ্যার প্রসূতি এ বিভাগ। এর বিস্তৃতিকে মনে রেখে আমাদের পাঠ করতে হবে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোর মধ্যে সমাজবিজ্ঞান পাঠের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।

বিভাগের তরুণ শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শিক্ষকতাকে টাকার অংক দিয়ে মাপলে হবে না, ভালোবাসতে হবে। গবেষণাকে ভেতরে নিতে হবে। আমরা যদি ভেতরে নিতে পারি, গবেষণা করবো ভাবি, তাহলে কিন্তু মনের আত্মতৃপ্তি হবে। শেষ পর্যন্ত সেটা মানুষ মনে রাখবে। 

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব মো. রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম ও রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ূন কবির।

এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব সোনিয়া ফারহানা ছনি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব  মো. মাসুদুর রহমান।

পর সমাজবিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বার্ষিক সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে সম্পদ ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. শিপ্রা সরকার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ মুহাম্মদ কায়েস।

অনুষ্ঠানে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রিয়াদ হাসান, পরিচালক (অর্থ-হিসাব) অধ্যাপক ড. তারিকুল ইসলাম, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

/তৈয়ব/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়