রাবিতে ১৪ দিনে জন্ডিসে আক্রান্ত ৮৫ শিক্ষার্থী
রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে জন্ডিস তথা হেপাটাইটিস ‘এ’ এর প্রকোপ। গত ১৫ দিনে ৮৫ জন শিক্ষার্থী এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দূষিত পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে শিক্ষার্থীরা জন্ডিস আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনে সাবমারসিবল পাম্পের সংখ্যা খুবই কম। আর টিউবওয়েল ও মোটরের পানিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের নজরদারি না থাকায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ দোকানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার রাখা থাকে। এ কারণেই শিক্ষার্থীরা জন্ডিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।
রাবির মেডিকেল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৪ দিনে ১৭৭ জন শিক্ষার্থীর জন্ডিস পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে ৮৫ জনের শরীরে হেপাটাইটিস ‘এ’ অর্থাৎ জন্ডিসের জীবাণু শনাক্ত করা যায়।
গত ১৫ তারিখ ১১ জন পরীক্ষা করালে জন্ডিস আক্রান্ত হন ৭ জন, ১৬ তারিখে ১৩ জনের মধ্যে ৫ জন, ১৭ তারিখ ৮ জনের মধ্যে ৬ জন, ১৮ তারিখ ২১ জনের মধ্যে ১২ জন, ২১ তারিখ ১৬ জনের মধ্যে ১০ জন, ২২ তারিখ ১৭ জনের মধ্যে ৮ জন, ২৩ তারিখ ১৫ জনের মধ্যে ৫ জন, ২৪ তারিখ ১৮ জনের মধ্যে ৮ জন এবং ২৫ তারিখ ২৭ জনের মধ্যে ৭ জন, ২৮ তারিখ ২০ জনের মধ্যে ১১ জন, ২৯ তারিখ ১১ জনের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের অতিরিক্ত প্রধান চিকিৎসক ডা. ফ ম আ জাহিদ বলেন, ক্যাম্পাসের ভিতরে একটা হোটেলও ভালো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন না। হোটেলের পানির বোতলগুলোও অপরিস্কার। বোতলগুলোতে কালো দাগ পড়ে আছে। গ্লাসগুলোও ওয়ানটাইম না। এক গ্লাসই তারা বারবার ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, শীতের সময় আবহাওয়া শুস্ক হয়ে যায়। আর ভাইরাসটা এই আবহাওয়াতে বেশি ছড়ায়। এজন্য হঠাৎ করেই জন্ডিস বেড়ে যায়। জন্ডিস সাধারণত একটি ভাইরাস জনিত রোগ, যা পানি ও খাদ্যের মাধ্যমে ছড়ায়। এখন খাবারগুলো যদি ভালোভাবে সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে এর প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। রোগ প্রতিরোধে সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে বেশি সচেতন হতে হবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিটি বিল্ডিং এ সাবমারসিবল পাম্প বসিয়েছি। আমি গণমাধ্যমের সাহায্যে সবাইকে সচেতন করতে চায় যে, আপনারা এমন জায়গা থেকে পানি পান করবেন না, যেখান থেকে সংক্রমণ হতে পারে। এটি আমরা ডাক্তারদের বলেছি, ডাক্তাররা শিক্ষার্থীদের বলছেন। এখন পানি কোনটা খাব, কোনটা খাবো না, সে বিষয়ে নিজেকে সচেতন হতে হবে। এই জায়গা থেকে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলে জন্ডিসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে পারবো।
/শাকিবুল/মেহেদী/