ঢাকা     সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৮ ১৪৩১

‘হেনস্তার’ অভিযোগে কুবি লিবারেল মাইন্ডসের সভাপতির পদত্যাগ

কুবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৮:০২, ৩১ জানুয়ারি ২০২৪
‘হেনস্তার’ অভিযোগে কুবি লিবারেল মাইন্ডসের সভাপতির পদত্যাগ

দায়িত্ব পালনকালে এক শিক্ষক কর্তৃক ‘হেনস্তার’ শিকার হওয়ায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইংরেজি বিভাগের সহযোগী সংগঠন লিবারেল মাইন্ডসের কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০২৩ এর সভাপতি মো. আনোয়ার আজম পদত্যাগ করেছেন। তিনি ওই বিভাগের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

গত ২৯ জানুয়ারি আনোয়ার আজম লিবারেল মাইন্ডসের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পদত্যাগ পত্র দেন। এর  অনুলিপি মোট পাঁচ জনকে দেয়া হয়েছে। তারা হলেন- কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক, লিবারেল মাইন্ডস কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২৪ এর প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা।

এদিকে ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাস ওই সভাপতি পদের মেয়াদ নেই বলে জানিয়েছেন।

পদত্যাগ পত্রে আজম বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিলো। মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান স্যারের নির্দেশনায় আমি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিভাগের সেমিনার রুমে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই এবং তালিকা তৈরির কাজ করছিলাম। এরই মধ্যে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানা এবং ইসরাত জাহান নিমনি ম্যাম সেমিনার রুমে প্রবেশ করেন। তখন শারমিন ম্যাম আমাকে দেখে ক্ষেপে যান এবং বিনা কারণে বকাঝকা ও ধমকাতে থাকেন। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নানাভাবে তিনি আমাকে অপমান করেন।

সেখানে তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত আক্রোশ, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতেই হয়তো তিনি সবার সামনে এ ধরনের অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপমানসুলভ আচরণে  খুবই ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন। এভাবে চলতে থাকলে কমিটির সদস্যরা কাজের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। আমি লিবারেল মাইন্ডসের সভাপতির দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছি এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করছি।

সভাপতি পদের মেয়াদ নিয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার আজম বলেন, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমার পদের মেয়াদ আছে। আমার পদ ঠিকই আছে।

জানতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানা বলেন, লিবারেল মাইন্ডসের নির্বাচনের সঙ্গে কোনোভাবেই আমি জড়িত নই। সেদিন সেমিনার রুমে বই আনতে গিয়ে অভিযোগকারী ছেলেটির সঙ্গে আমার অল্প কিছুক্ষণ কথা হয়। এরপর সে বের হয়ে যায়। ফলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কোন প্রশ্নই আসে না।

তিনি বলেন, সেমিনার রুমের আলমারি তালাবদ্ধ থাকায় আমি ঘটনাস্থলে থাকা আবিরকে বকাঝকা করেছিলাম। কারণ শিক্ষার্থীদের টাকায় বিভাগের দুইজন শিক্ষার্থীকে সেমিনার রুমের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কেন সময় জ্ঞানহীন শিক্ষার্থীদের সেমিনারের দায়িত্ব দেওয়ার কারণে আমি আবিরকে বকাঝকা করেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, আমি প্রচণ্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার পক্ষে ক্লাসের দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ওই ছেলেটা প্রচণ্ড মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। এই অবস্থায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হওয়া সম্ভব না।

এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহা. হাবিবুর রহমান বলেন, পদত্যাগ পত্রে ও যা উল্লেখ করেছে তা সব মিথ্যা, বানোয়াট। আমি তাকে কিছুই করতে বলিনি।

ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাস বলেন, শিক্ষাজীবনের শেষ পর্যায়ে এসে একজন ছাত্র যেভাবে শিক্ষকের নামে অভিযোগ দিলো, তা দুঃখজনক। আমরা তাকে সময় দিয়েছিলাম এই বিষয়টি নিয়ে বসার জন্য। কিন্তু সে কোনো কথাই শুনেনি। এ রকম ঘটনার পর শিক্ষকরাও একাডেমিক কার্যক্রম চালাতে আগ্রহ পাবে না। ইতোমধ্যে আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মী এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

/এমদাদুল/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়