রাবিতে ভবন ধস: গুণগত মান পরীক্ষার দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের
রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
![রাবিতে ভবন ধস: গুণগত মান পরীক্ষার দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাবিতে ভবন ধস: গুণগত মান পরীক্ষার দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024February/RU-Human-Chain-2402051031.jpg)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নির্মাণাধীন শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলের সাটার ধসের ঘটনায় শ্রমিকদের পর্যাপ্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ কয়েকটি দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় শহিদ বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়িত্বে অবহেলায় জড়িতদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পুনরায় গুণগত মান পরীক্ষা।
মানবন্ধনে রেজওয়ান গাজি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে কাজ করেছে মজিদ অ্যান্ড সন্স। এর আগেও এদের দূর্নীতির রেকর্ড আছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় তারা কাজ করছে। এর আগেও এই ভবনে দুইজন শ্রমিক মারা গেছে। কিন্তু শ্রমিক মৃত্যুর এই ঘটনায় কোনো তদন্ত বা কারণ বের না করেই নির্মাণ কাজ চলমান ছিল। এখন আবার ধসে পড়েছে। এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে এই কাজে আরও কতটা দুর্নীতি হয়েছে, সেটা বের করতে হবে। তার আগ পর্যন্ত হলের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হোক।
কর্মসূচিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানান ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইনলাম কনক। তিনি বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় একটি দেশ ও জাতির সম্পদ। শিক্ষার মান যেমন উন্নত রাখা হয়, তেমনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনও উন্নত রাখা উচিৎ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে হাজার হাজার শিক্ষার্থী থাকবে। সেই হল নির্মাণের আগেই ধসে পড়ছে। এখানে নির্মাণ কাজে এমন একটা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যেটি জাতীয়ভাবে দূর্নীতিগ্রস্ত। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স যদি এতই শক্তিশালী হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থী এবং অবিভাবকদের নিয়ে এর বিরুদ্ধে দাবি তুলুক। আমরা চাই উপযুক্ত পরীক্ষক দিয়ে পুরো ভবনের গুণগত মান পরীক্ষা করে তারপর কাজ শুরু করা হোক।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন, এটাকে দূর্ঘটনা বলা যাবে না। কোনো গাফিলতি না থাকলে এভাবে নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ার কথা না। আর এই ঘটনায় তদন্ত হওয়া উচিৎ স্বাধীন কোনো পক্ষের মাধ্যমে। আজকে শ্রমিকদের জায়গায় শিক্ষার্থীরা থাকলে ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে উঠতো। কিন্তু শ্রমিকদের জীবন ও শিক্ষার্থীদের মতোই মূল্যবান। ধসের ঘটনায় তদন্ত শুরু করতেও গড়িমসি করছে বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু নির্মাণ কাজ চলছেই। তদন্ত শেষ করার আগে নির্মাণ কাজ চলা মানে সামনে আরেকটি দূর্ঘটনার জন্য অপেক্ষা করা। তাই এই ধসের সঠিক তদন্ত শেষ করার পরে নির্মাণ কাজ শুরুর দাবি জানাচ্ছি।
পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ আমানের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর, সাগর হোসেন এবং রমজান আলী।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারি নির্মাণ কাজ চলাকালীন ভবনের ছাদের সাটার ধসে পড়ে। এতে কয়েকজন শ্রমিক চাপা পড়ে। পরে ফায়ার সাভির্সের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ৯ জন শ্রমিক আহত হয়।
/শাকিবুল/মেহেদী/
আরো পড়ুন