ঢাকা     রোববার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৭ ১৪৩১

৪ দফা দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ বিরোধী বিক্ষোভ

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
৪ দফা দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ বিরোধী বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা চার দফা দাবি জানায়। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহীদ মিনার, টারজান পয়েন্ট ও ছাত্রী হলগুলো ঘুরে পুনরায় ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বরে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীদের- ‘ছাত্রলীগ ধর্ষণ করে, প্রশাসন কি করে’, ‘ধর্ষকদের পাহারাদার, হল প্রশাসন চমৎকার’, ‘However I dress, wherever I go, yes means yes, no means no‘, ‘ধর্ষকদের পাহারাদার, ধিক্কার ধিক্কার’, ‘যে প্রশাসন ধর্ষকদের পাহারা দেয়, সেই প্রশাসন চাই না’, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে আমরাই থাকবো, অছাত্ররা থাকবে না’, ‘জাহাঙ্গীরনগরের মাটিতে, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘হল থেকে দল থেকে, ধর্ষকদের বহিষ্কার করো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

তাদের দাবিসমুহ হলো- ধর্ষণে অভিযুক্ত ও পলায়নে সহযোগিতাকারীদের বিচার দ্রুততম সময়ে নিশ্চিত করতে হবে, মীর মশাররফ হোসেন হল ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ এবং হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে আসা পলায়নে সাহায্য করার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে, সব আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের তাড়াতে হবে, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা শাখার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে।

মিছিল শেষে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তীর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া বসরী তাপস্বী বলেন, ‘সেঞ্চুরি মানিক থেকে মোস্তাফিজ পর্যন্ত যে ঘটনা ঘটে গেছে সেটা বিচ্ছিন্ন হতে পারে না। একটা নির্দিষ্ট দল এসব ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, যা আমরা সবাই অবগত। কিন্তু প্রশাসন কখনো উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা করে না। জাবি সবার জন্য নিরাপদ হোক। বহিরাগত বলে আমরা যাদের ট্যাগ দিয়েছি, যাদের টাকায় আমাদের ক্যাম্পাস চলে, তাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হোক।’

আইআইটি বিভাগের শিক্ষার্থী সোয়াতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কিন্তু ইনজাস্টিসের কথা কখনো বলেন নি। আর ছাত্রলীগ যদি ন্যায়ের পক্ষে থাকে, তবে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের হল ছেড়ে দেওয়া উচিত। ছাত্রলীগ সুস্থ্য নেতৃত্বের বদলে অসুস্থ্য নেতৃত্ব তৈরি করছে। আমি চাইবো এই বিষয়ে তারা কাজ করুক।’

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী অনামিকা নূরাইন বিত্ত বলেন, ‘ঘুরে ফিরে কেনো ছাত্রলীগের কর্মীরাই ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে অপকর্মগুলো ঘটায়। আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ধর্ষণ একটি পাওয়ার প্র্যাকটিস। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি পাওয়ার প্র্যাকটিস করে। ছাত্রলীগের কর্মীদের ক্যাম্পাসে শেখানো হয়, কিভাবে বাপ মা ছেড়ে আসা একজন শিক্ষার্থীকে টর্চার করতে হয়। সেখান থেকে তারা ক্ষমতার স্বাদ পায়। এবার রেপ হয়েছে, পরবর্তীতে হবে রেপ অ্যান্ড মার্ডার। আমাদের দাবিগুলো প্রশাসনের মানতে হবে এবং সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।’

উল্লেখ্য, গত শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে  ৯টার দিকে জাবিতে মীর মশাররফ আবাসিক হলের ৩১৭ নং কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে কৌশলে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী মোস্তাফিজুর রহমান ও বহিরাগত মামুনুর রশীদ মামুন।

/আহসান/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়