জবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০
জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই গ্রুপেরই অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পূর্বে এক নারী শিক্ষার্থীকে হয়রানির জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাহদুর শাহ পার্কের সামনে প্রথম দফায় এবং সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় দ্বিতীয় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
প্রতক্ষ্যদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নীরব নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিবাদ হয়। এ ঘটনার সূত্র ধরে ওইদিন মঙ্গলবার দুপুরে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ওই ছেলেকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এর প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত সরস্বতী পূজা শেষে সন্ধ্যায় প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ইব্রাহীম ফরাজী গ্রুপের নেতাকর্মীদের (নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগ) ওপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরপর প্রধান ফটকের সামনে দুই গ্রুপের মারামারি হয়। এসময় সভাপতি ফরাজি গ্রুপের নেতাকর্মী কম থাকায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ব্যাচের তাসরিফ ও নিলয়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের গাজী সামসুল হুদা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল বারেকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এতে তাসরিফ মাথা ও নিলয় হাতে রক্তাক্ত গুরুতর আহত হয়ে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়।
পরবর্তীতে সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা সংঘঠিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে সাধারণ সম্পাদক আকতারের গ্রুপের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এতে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নিয়ামত, সংগীতের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অনন্ত, কলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মিরাজ হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শেখ রিফাত আব্দুল্লাহ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তামিম ইকবালসহ আরো অনেকে আহত হয়। পরে সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন ঘটনাস্থলে এসে নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়ে আহতদের একজন নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাফসির জানান, আমার এক বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করা হলে আমি তার প্রতিবাদ করি। তারই জেরে এ মারামারির ঘটনা।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক বোনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের বাহিরে ছোট একটি ঘটনা ঘটেছে। পূর্বের ঘটনার রেশ ধরে বুধবার হঠাৎ করে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই সময় আমি, সভাপতি ফরাজী ভাই এবং প্রক্টরিয়াল বডিসহ সবাই সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করি। এটি ডিপার্টমেন্টের বিষয় তারা সমাধান করবে।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, দুই বিভাগের শিক্ষার্থীর মধ্যে মারামারি হয়েছে। প্রশাসন অ্যাকাডেমিকভাবে ব্যবস্থা নিবে। আর যদি কেউ ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে তাহলে সাংগঠনিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ভিক্টোরিয়া পার্কে মারামারি হয়, তার রেশ ক্যাম্পাসে কিছুটা ছিল। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
/লিমন/মেহেদী/