ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

শ্রদ্ধা নিবেদন নিয়ে কুবি ও নোবিপ্রবিতে হট্টগোল

ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১২, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  
শ্রদ্ধা নিবেদন নিয়ে কুবি ও নোবিপ্রবিতে হট্টগোল

মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহিদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) হট্টগোল দেখা দিয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয় দুটিতে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, প্রথম প্রহরে কুবি পরিবার ফুল দেওয়ার পর পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শাখা ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা সমিতি ও কর্মচারী সমিতি ফুল দেয়। এরপর কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িকে ফুল দেওয়ার অনুরোধ জানান উপস্থাপক নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্ত। এসময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান এসে প্রথমে অমিত দত্তের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বাকি থাকার পরেও পুলিশকে সুযোগ দেওয়ার কারণ জানতে চান। পরবর্তীতে একই প্রশ্ন রাখেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের কাছে।

অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, আমাদের ছাত্ররা ফুল দেয়নি। আবাসিক হল ও বিভাগগুলোও ফুল দেয়নি। এটা কোন ধরনের কালচার। তারা অবশ্যই ফুল দেবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ফুল দেবেন।

এরপর কুবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান অনুষ্ঠানের আহ্বায়ককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অপমান করে বাইরের সংগঠনকে আনবেন। তারপর দোকান মালিক সমিতিকে আনবেন, ভূমিদস্যু আনবেন এসব আপনাদের কাজ? এসব করার জন্য আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন? আপনাকে যদি কেউ নির্দেশ দিয়ে থাকে তাহলে তার নাম বলতে হবে।'

অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, 'আমি শুরু থেকেই তাদের (পুলিশ ফাঁড়ি) ডিসঅ্যাগ্রি করেছি। এটা নিয়ে আমরা তর্ক না করি। বিভাগ এবং হলগুলোর আগে তাদের (পুলিশ ফাঁড়ি) ফুল দেওয়ার বিষয়ে আমাদের প্রশাসনিকভাবে ভুল হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করব। এই মুহূর্তে এখানে এটা আলোচনার বিষয় না।'

অন্যদিকে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের অব্যবস্থাপনায় নোবিপ্রবিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

জানা যায়, দিবসটি উপলক্ষে শুরুতে শোক পদযাত্রা করা হয়। পদযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির পর নোবিপ্রবি ছাত্রলীগকে শ্রদ্ধা নিবেদন করার আহ্বান জানানো হয়। শিক্ষক সমিতির পরে নোবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নাম ঘোষণা না করায় তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। পরবর্তীতে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের ঘোষণা না মেনে সব বিভাগ, দপ্তর ও সংগঠনের ফুল দেওয়া শেষে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের এই সংগঠন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, নোবিপ্রবিতে সব সময়ই সাদামাটাভাবে আয়োজন করা হয় দিবসসমূহ। যার ফলে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ এক শতাংশ ও হয় না।

দিবস পালনে কোন সমন্বয় নেই বলে অভিযোগ নোবিপ্রবি ছাত্রলীগেরও। এই বিষয় অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নাঈম রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান শুভ বলেন, আমাদেরকে যখন সুযোগ দেওয়া হতো, তখনই আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতাম। দিবস উদযাপনে সব সময়ের মত এবারও সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে। ভবিষ্যতে জাতীয় দিবস উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরো সতর্ক হয়ে পরিকল্পনা করার আহবান নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের।

এ বিষয়ে নোবিপ্রবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক ইবনে ওয়াজেদ ইমন বলেন, এখানে একটি ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। আমরা আশা করি পরিবর্তীতে এরকম কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না।

ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক বলেন, আমাদের দিবস উদযাপনের বিষয়ে সংশ্লিষ্টটা নেই। আমরা নির্দেশিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি।

নোবিপ্রবি জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয় উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী বলেন, প্রশাসনিক কিছু বিষয়ে সমস্যা হলে তা পুরো নোবিপ্রবির নাম চলে আসে। তাই আমাদের সবাইকে এই বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। আমরা সবাই পরবর্তীতে আরও সতর্কতার সঙ্গে সবার সহযোগিতায় স্বতঃস্বপূর্তভাবে সুন্দর আয়োজন করবো।

/এমদাদুল/ফাহিম/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়