ঢাকা     রোববার   ০৭ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৩ ১৪৩১

জাবি ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতা বহিষ্কার, প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ১৬:১৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
জাবি ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতা বহিষ্কার, প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

এসময় 'অমর্ত্য-ঋদ্ধ বহিষ্কার কেন?', 'নীতি বহির্ভূত বহিষ্কারাদেশ বাতিল কর', 'বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত কর', 'আজ্ঞাবহ প্রশাসন চাই না', 'মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চাই' ইত্যাদি সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন আন্দোলনকারীরা।

সামাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নেতা। তাকে আমরা দোষে-গুণে দেখি। তার যে বীরত্ব রয়েছে সেগুলো আমরা স্বীকার করি। তার যদি সমালোচনা করার জায়গা থাকে তাহলে সেটা নিয়ে কথা বলার অধিকার আমাদের আছে।  কিন্তু বর্তমান সময়ে তাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যেন তিনি ঈশ্বর। বর্তমান রাষ্ট্র এমন একটি ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করছে, যাতে প্রতিবাদ করার মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। যার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ আমাদের উপর চেপে বসে। পুরাতন গ্রাফিতি মুছে ফেলে নতুন গ্রাফিতি তৈরি করা হবে, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি। কিন্ত জাবি প্রশাসন সরকারের দালালী করে মিথ্যা অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছে। আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই।

কর্মসূচিতে নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কতটুকু আজ্ঞাবহ হলে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি, লুটপাট এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়ন কাজ করে। এজন্য তাদের প্রতি ক্ষোভ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। শিক্ষার্থীর অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আমরা গ্রাফিতি করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এতটা আজ্ঞাবহ যে, তারা শিক্ষার্থীদের ভালো–মন্দ বোঝে না। তারা বোঝে কিভাবে কণ্ঠরোধ করতে হয়, কিভাবে লুটপাট করতে হয়। দেওয়াল লিখন বাক-স্বাধীনতার অংশ। কিন্তু জাবি প্রশাসন বাক-স্বাধীনতা হরণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে নরকে পরিণত করেছে।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। আছে শুধু দলীয় আনুগত্য করার স্বাধীনতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছে । বৃদ্ধি পাচ্ছে দলীয় আনুগত্য করার। রাবির উপাচার্য ও উপউপাচার্য ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের ফুলের ঢালা নিয়ে শহিদ মিনারে যায়। এটা কেমন সংস্কৃতি? আমরা এ ধরণের স্বাধীনতা চাই না। আমরা চাই সাম্যের স্বাধীনতা। রাবি থেকে শুরু করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করলে সিট বাণিজ্য করা যায়, অবৈধভাবে হলে অবস্থান করা যায়। শিক্ষার্থীদের কন্ঠরোধ করলে, সেটা বিস্ফোরণে পরিণত হবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে শীঘ্রই তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হোক।

এসময় সমাজতন্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র যুব গণমঞ্চ, নাগরিক ছাত্র ঐক্য ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের দেয়ালে ধর্ষণবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকায় ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

/শাকিবুল/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়