ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

বিভিন্ন অপরাধে ৬৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে ঢাবি

ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৮, ৫ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৬:৪৩, ৫ মার্চ ২০২৪
বিভিন্ন অপরাধে ৬৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় আরও ৬০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শৃঙ্খলা পরিষদের সুপারিশ অনুযায়ী রোববার (৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এএসএম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে আয়োজিত সিন্ডিকেট সভায় এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারসহ সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ। 

সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন-  মুখশিল্প বিভাগের জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম, ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. রিয়াদ এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদ। 

মৃৎশিল্প বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে আটক রেখে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। অভিভাবকের নিকট মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এই ঘটনায় ভিক্টিম শিক্ষার্থীর পিতা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নামে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সাময়িক বহিষ্কার করে।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে আযহা, মর্তুজা,আজিম এবং রিয়াদ গত জানুয়ারিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানস্থ শিখা চিরন্তনে ঘুরতে আসা দুজন দর্শনার্থীর গতিরোধ করেন। এসময় এলোপাথাড়ি মারধর করে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।

অসদাচরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদকে সাময়িক বহিষ্কৃকার করা হয়েছে। 

এছাড়া পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কৃত ৬০জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই জনকে পরীক্ষাসহ তিন সেমিস্টার, ৪০ জনকে পরীক্ষাসহ দুই সেমিস্টার এবং ১৮ জনকে পরীক্ষাসহ ১ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

ক্যাম্পাসে ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে চাঁদা গ্রহণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রক্টর অফিসের মো. শামীম হোসেনকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়

সিন্ডিকেট সভার সিন্ধান্ত অনুযায়ী, বহিষ্কৃত ওই সাত শিক্ষার্থী বহিষ্কারাদেশ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় হলে অবস্থান করতে পারবে না। তাদের অপরাধের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেনো স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না- এ মর্মে কারণ দর্শানো এবং সাত কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব প্রদানের জন্য হয়েছে।

ওই সাত শিক্ষার্থীর ব্যাপারে ঢাবি প্রক্টর মাকসুদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, সেটা এখনো চলমান। তাদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে চুড়ান্ত নোটিশ না আসা পযন্ত বহিষ্কার করা যায় না। এখন কোর্ট থেকে অভিযুক্তরা যদি নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার আবেদন করবে। আদালতের রায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যবেক্ষণ করবে। পুরোপুরি নির্দোষ হলে তাদের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হবে। আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের বহিষ্কারাদেশ জারি থাকবে বলেও জানান প্রক্টর।

উল্লেখ্য, সাময়িক বহিষ্কারের চিঠি সংশ্লিষ্ট থানা, শিক্ষার্থীর স্থানীয় অভিভাবক এবং স্থায়ী ঠিকানায় প্রেরণ করা হবে।

/হারুন/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়