ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

শর্ত সাপেক্ষে অবরোধ স্থগিত জাবির নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ১৩ মার্চ ২০২৪  
শর্ত সাপেক্ষে অবরোধ স্থগিত জাবির নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন অবরোধ কর্মসূচি শর্ত সাপেক্ষে স্থগিত করেছেন নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ। নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম তিন কার্যদিবস সময় চাওয়ার পর এ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বুধবার (১৩ মার্চ) বেলা ৩টায় নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ সময় চান উপাচার্য।

নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সংগঠম অধ্যাপক ড. পারভীন জলি বলেন, আজকে বেলা ৩টায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, বিভিন্ন অনুষদের ডিনসহ আমরা আলোচনায় বসি। আলোচনা শেষে উপাচার্য ১৮ তারিখ দুপুর পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। এর মধ্যে প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষ স্বেছায় পদত্যাগ করবেন, তা-না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ এ্যাক্ট অনুযায়ী প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষকে সরানো হবে।

গত সোমবার ধর্ষণকাণ্ডে জড়িত ও সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ পাঁচ দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের আন্দোলনকারীরা। 

এর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টানা তিনদিন প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে অবরোধ করার ফলে প্রশাসনিক সব ধরনের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অবরোধের ফলে প্রশাসনিক ভবনের সকল অফিস ও শাখার প্রয়োজনীয় কাজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও অবরোধের ফলে ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি সংক্রান্ত সভা করা যাচ্ছে না। পবিত্র রমজান মাসে আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে হিসাবাধ্যক্ষ অফিসে জরুরি কাজ থাকা সত্ত্বেও সেসব করা সম্ভব হচ্ছে না। অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখা উদ্বেগজনক বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করেন। এটি সুষ্ঠু ধারার গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও অধিকারের পরিপন্থী।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আন্দোলনরত মঞ্চ যেসব দাবিতে আন্দোলন করছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সে বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন এলাকায় সংঘটিত ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কার এবং তাদের শিক্ষা সনদ বাতিল করা হয়েছে। অপরাধীদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের নামে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে মাদক রোধে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং মাদকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ যথাযথ কমিটি কর্তৃক তদন্তের পর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। 

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং তিনি ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসের বাসা ছেড়ে চলে গেছেন। আবাসিক হলগুলোতে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুটি ছাত্র হলে সংঘটিত ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছাত্রত্ব শেষ হওয়া, অনিয়মিত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের শিক্ষা সনদ বাতিল এবং তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

/আহসান/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়