রাবিতে রাজশাহীর চার কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবি

রাজশাহী জেলার চার সরকারি কলেজকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধিভুক্ত করার সীদ্ধান্ত বাতিলের দাবি করা হয়েছে। শনিবার (৬ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করেন রাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল এবং সাধারণ সম্পাদক আশিকুর হৃদয়।

বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে হাজারো শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজসমূহের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক উপায়ে একটি সিদ্ধান্ত চাপানো হয়েছে।

অধিভুক্তকরণের বাস্তব ভিত্তি, ফলাফল এবং প্রাপ্তি অনুসন্ধান করে কোনো গবেষণা প্রতিবেদন আমাদের সামনে আসেনি। কোনো প্রকার যৌক্তিক ভিত্তি নিরুপণ এবং প্রকাশ ছাড়াই খেয়াল-খুশির নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গেলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়বে।

এ সিদ্ধান্তের পরিণতি হবে ধ্বংসাত্মক উল্লেখ করে তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের বর্তমান সংকটময় পরিণতি, আরোপিত সিদ্ধান্তের বিষময় ফলাফল জানান দিচ্ছে। কলেজগুলোয় ভর্তি প্রক্রিয়ায় ভোগান্তি, ক্লাস লেকচার এবং প্রশ্নপত্রের অসামঞ্জস্যতা, ফলাফল প্রদানের দীর্ঘসূত্রিতা, ব্যয়বৃদ্ধি, ফলাফল বিপর্যয়, সেশনজটসহ বহুমুখী সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা বিপর্যস্ত এবং আন্দোলনরত।

ঢাকার সাত কলেজের সংকটের কোনো সমাধানযোগ্য রূপরেখা অর্জন না করেই রাজশাহী ও চট্টগ্রামের শীর্ষ কলেজগুলো নিয়ে অনুরূপ সিদ্ধান্ত একই পরিণতিই বয়ে আনবে। এছাড়াও রাবির বহু বিভাগ সেশনজট, শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থায় ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে কলেজ অধিভুক্তির বাড়তি চাপ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার অবশিষ্ট পরিবেশটুকুও বিঘ্নিত করবে। একই সঙ্গে অধিভুক্ত এ চার কলেজের একাডেমিক-প্রশাসনিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

একই বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষার যে সংকট বিদ্যমান, সরকার কখনোই তা নিরসনের বাস্তব প্রচেষ্টা গ্রহণ করেনি। উপরন্তু শীর্ষ কলেজগুলোকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার একটি অন্তঃসারশূন্য উদ্যোগ নিয়েছে। যা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানে কোনো উন্নয়ন তো আনছেই না, বরং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মানবৃদ্ধির পক্ষের জনমতকে বিভক্ত ও দুর্বল করছে। একই সঙ্গে শীর্ষ কলেজ সমূহের বাইরের অসংখ্য কলেজে অধ্যয়নরত লাখো শিক্ষার্থীর মানসম্মত শিক্ষার দাবিও আড়াল হচ্ছে। মূলত এই রাষ্ট্র এবং সরকার অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রদানের দায়িত্ব অস্বীকার করতে চায়। অধিভুক্তির এই সিদ্ধান্ত তারই ইঙ্গিত বহন করে।

তারা রাজশাহী জেলার গুরুত্বপূর্ণ চার কলেজকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করার অন্তঃসারশূন্য, ধ্বংসাত্মক এবং হঠকারী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। একই সঙ্গে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাবিসহ রাজশাহী সরকারি কলেজ, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ ও নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান করেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহাকারী সচিব শতরূপা তালুকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে রাজশাহী শহরের চার কলেজকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার সীদ্ধান্ত হয়েছে।