নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড়যুগ পূর্তি উদযাপন
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড়যুগ পূর্তি ও ১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) নানা আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দিবসটি পালন করেন।
১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ এমপি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তিন শব্দের যে স্লোগান বানিয়েছেন- ‘শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন’, খুব চমৎকার হয়েছে। কারণ আমরা তো বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি শিক্ষার জন্য, পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার জন্য, গবেষণার মাধ্যমে উন্নয়নের জন্য। তাই শিক্ষা, গবেষণা উন্নয়ন আসলেই এক সুতায় গাঁথা। এ চমৎকার ভাবনার জন্য উপাচার্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকার ইচ্ছের কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমাদের স্বপ্ন ছিল বিশ্ব ভারতীর মতো একটি প্রতিষ্ঠান এখানে গড়ে তোলা। আমি জানি মাত্র সাড়ে ৫৬ একর জায়গা দিয়ে বিশ্ব ভারতীর মতো প্রতিষ্ঠান হবে না। তাই আপনারা দ্বিতীয় যে ক্যাম্পাসের কথা চিন্তা করছেন, এটির জন্য কাজ করেন। আমরা এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় যারা ছিলাম, তারা এবারও একত্রে থাকবো।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এখানকার অ্যাকাডেমিক পরিবেশকে আমরা সুনিশ্চিত করতে চাই। একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় করার যে অভিযাত্রা, সেখানে সবাই একত্রিত হয়েছি।
ত্রিশালে মাটিকে পুণ্যভূমি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম পা দিয়েছিলেন। তাই এটি একটি পুণ্যভূমি। এখানে আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় করতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদার হাতে সাহায্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন। আমাদের শুধু সেটি গ্রহণ করতে হবে।
উপাচার্য বলেন, আমাদের এই ক্যাম্পাসের খুব কাছেই বিচুতিয়া ব্যাপারী বাড়ি, একটু দূরে রফিজউল্লাহ দারোগার বাড়ি। এসব জায়গায় নজরুল ছিলেন। জায়গাগুলো এখন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাদুঘর হয়ে আছে। এগুলো যদি আমাদের ক্যাম্পাসের সঙ্গে যুক্ত করা যায়, তাহলে একদিকে যেমন জায়গাগুলোর সঠিক সংরক্ষণ সম্ভব, ঠিক তেমনিভাবে আমাদের ক্যাম্পাসের কলেবরও বৃদ্ধি হবে।
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বৃহত্তর ময়মনসিং সাংস্কৃতিক ফোরামের মহাসচিব প্রকৌশলী রাশেদুল হাসান শেলী।
এছাড়া আলোচনা করেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুশাররাত শবনম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রিয়াদ হাসান, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তপন কুমার সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর অনুষ্ঠানে ধন্যবাদজ্ঞাপনসহ সঞ্চালনা করেন।
এর আগে, দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ১০টায় জাতীয় সঙ্গীত সহযোগে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে নবনির্মিত কলা ভবনে সামনে শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্তকরণ শেষে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গাহি সাম্যের গান মঞ্চে গিয়ে শেষ। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম দিবস উপলক্ষে কেক কাটার পর আলোচনা সভা শুরু হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ৯ মে একটি বিশ্বমানের সাংস্কৃতিক চেতনাকে বুকে লালন করে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের নামাপাড়া এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। চারটি বিভাগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে এর বিভাগ সংখ্যা ২৪টি।
/তৈয়ব/মেহেদী/